কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে সামরিক কর্মকাণ্ড সীমিত করতে এবং বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই চুক্তির শর্ত হিসেবে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার দাবি জানানো হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের ঘোষণা অনুযায়ী, এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো কৃষ্ণ সাগরে সামরিক অভিযান বন্ধ করা এবং বাণিজ্যিক জাহাজের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করা। এর ফলে, ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই তাদের শস্য ও অন্যান্য কৃষি পণ্য রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোতে পুনরায় প্রবেশাধিকার পেতে পারে। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয় দেশই রাশিয়ার ও ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনার উপর ৩০ দিনের জন্য হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে।
কিন্তু, রাশিয়া এই চুক্তির বাস্তবায়নের শর্ত হিসেবে তাদের উপর আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা সুইফটে (SWIFT) রাশিয়ার প্রবেশাধিকার পুনরায় চালু করা। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে, রাশিয়াকে এই ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলে তা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শনের শামিল হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, এই চুক্তিটি একটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রক্রিয়ার সূচনা করবে নাকি এটি একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা হিসেবেই গণ্য হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় অনেক দেশের খাদ্য সরবরাহ ঝুঁকিতে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া এই চুক্তি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম এবং সরবরাহ পরিস্থিতি সরাসরিভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই চুক্তি সফল হয়, তাহলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা সংকট কিছুটা হলেও কমতে পারে। তবে, রাশিয়ার শর্তগুলো পূরণ করা হলে, তা ভবিষ্যতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন