পেরুর রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে ২০২৬ সালের ১২ই এপ্রিল সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পেরুর রাজনীতিতে যে ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে তার অবসান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
গত কয়েক বছরে পেরুতে সরকার প্রধানের পদে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
প্রেসিডেন্ট বোলোয়ার্তের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন পেরু গুরুতর নিরাপত্তা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাজধানী এবং কায়াও প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
১৬ই মার্চ একজন সুপরিচিত কুম্বিয়া সঙ্গীতশিল্পীর হত্যাকাণ্ডের জেরে দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়, যা পরবর্তীতে পেরুর কংগ্রেসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুয়ান হোসে সান্টিভানেজের অপসারণের কারণ হয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার দুর্বলতার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত সাত বছরে পেরুতে ছয়জন প্রেসিডেন্ট এসেছেন। ২০২২ সালে দিনা বোলোয়ার্তে দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাস্তিলোকে আইনপ্রণেতারা অভিশংসিত করে ক্ষমতাচ্যুত করেন, কারণ তিনি আইনসভা ভেঙে জরুরি অবস্থা জারির চেষ্টা করেছিলেন।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট বোলোয়ার্তে আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন দেশের জন্য “স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি” তৈরি করবে। তিনি আরও বলেন, তার সরকার এই নির্বাচনের ফলাফলের নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নির্বাচনের ফল যাতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়, সেদিকেও নজর রাখা হবে।
২০২২ ও ২০২৩ সালে পেরুতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা হয়, যাতে ৪৯ জন নিহত হয়। এই ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রেসিডেন্ট বোলোয়ার্তে এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (International Criminal Court) অভিযোগ দায়ের করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও প্রেসিডেন্ট বোলোয়ার্তে এই ঘটনার সাথে তার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন।
এই নির্বাচনের ফলে পেরুর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাই একটি দেশের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য।
তথ্য সূত্র: CNN
