ফিলিস্তিনি নির্মাতার উপর ইসরায়েলিদের হামলা, জীবন হারানোর শঙ্কা!

ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা, যিনি অস্কার জয়ী, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে জীবন হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

পশ্চিম তীরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা হামদান বাল্লাল, যিনি সম্প্রতি অস্কার জয় করেছেন, জানিয়েছেন যে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এবং সেনাদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সময় তিনি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু মঙ্গলবার তিনি মুক্তি পান।

ঘটনাটি ঘটেছিল পশ্চিম তীরের সুসিয়া গ্রামে। জানা গেছে, হামদান বাল্লাল তার প্রতিবেশীর বাড়িতে বসতি স্থাপনকারীদের হামলার দৃশ্য ধারণ করতে গিয়েছিলেন। ঘটনার সময় মুসলমান সম্প্রদায়ের পবিত্র রমজান মাস চলছিল।

আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাল্লাল জানান, পরিস্থিতি যখন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল, তখন তিনি তার পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চান। কিন্তু তার বাড়ি ফেরার পথে পরিচিত এক বসতি স্থাপনকারী এবং দুইজন ইসরায়েলি সেনা তাকে অনুসরণ করে। এরপর তার বাড়ির কাছেই তার উপর হামলা চালানো হয়।

বাল্লাল বলেন, “সেনারা সরাসরি আমার দিকে বন্দুক তাক করে। বসতি স্থাপনকারী আমার পিছনে এসে আমার উপর হামলা করে। আমি জানি না তার হাতে কি ছিল।” হামলার সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেনারা তাকে মারধর করতে থাকে এবং বন্দুক দিয়ে আঘাত করে।

তিনি আরও বলেন, “আমি অনুভব করেছি তারা আমাকে মারতে চায়, শাস্তি দিতে নয়, বরং আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।”

উল্লেখ্য, বাল্লাল এবং আরও দুই ইসরায়েলি নাগরিক মিলে ‘নো আদার ল্যান্ড’ নামক একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন। এই তথ্যচিত্রে পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তা অঞ্চলে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা এবং ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ধ্বংসের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গত ২রা মার্চ এই তথ্যচিত্রটি সেরা প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে অস্কার জয় করে।

হামদান বাল্লাল আরও জানান, ৭ই অক্টোবর, ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী “বসতি স্থাপনকারীদের যা খুশি তাই করতে দেয়”। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৭ মাসে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় পশ্চিম তীরে অন্তত ৮৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনি বন্দি অধিকার সংস্থা জানিয়েছে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫,৭০০ ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *