ইউরোপের ‘স্টাইল এক্সপ্রেস’: প্যারিস থেকে মিলান, দ্রুত গতির ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ।
প্যারিস এবং মিলান, ইউরোপের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে দ্রুত গতির ট্রেন পরিষেবা সম্প্রতি পুনরায় চালু হয়েছে। ২০২১ সালের এক ভূমিধসের কারণে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই পরিষেবা বন্ধ ছিল। ট্রেন পরিষেবা প্রদানকারী ইতালীয় কোম্পানি, ট্রেনিটালিয়ার ‘ফ্রেচ্চিয়ারোসা’ (Frecciarossa) বা ‘রেড অ্যারো’ এখন আবার এই রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করেছে।
এই ট্রেনের মাধ্যমে মাত্র সাড়ে ছয় ঘণ্টায় এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়া সম্ভব। এপ্রিল মাস থেকে এই পরিষেবা পুনরায় চালু হয়েছে এবং বর্তমানে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।
এই রুটে ভ্রমণের টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য প্রায় ৩৫ ইউরো (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় [টাকার পরিমাণ]) থেকে শুরু। দ্রুত গতির এই ট্রেনে প্যারিস থেকে মিলান যাওয়ার পথে ভ্রমণকারীরা আল্পস পর্বতমালার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।
শুধু তাই নয়, এই পথে লিয়ন (Lyon) এবং তুরিনের (Turin) মতো সুন্দর শহরগুলোতেও থামার সুযোগ রয়েছে।
প্যারিসে (Paris) নতুন কিছু আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। এখানকার ১৯তম অ্যারোন্ডিসমেন্টে (arrondissement) বেশ কিছু নতুন স্থান খোলা হয়েছে। সম্প্রতি সংস্কার করা ‘লা জিওড’ (La Géode) সিনেমা হলে বিশাল ডিস্কো বলের ভিতরে আইম্যাক্স (IMAX) সিনেমা দেখার সুযোগ রয়েছে।
যারা ফরাসি ভাষা বোঝেন না, তাদের জন্য এখানে ইংরেজি অনুবাদ শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও, এখানে রয়েছে ‘বুম বুম ভিল’ (Boom Boom Villette) ফুড হল, যেখানে লাইভ কনসার্টের ব্যবস্থাও আছে।
ফ্রান্সের খাদ্য রাজধানী হিসেবে খ্যাত লিয়নে রয়েছে নানা স্বাদের খাবারের অভিজ্ঞতা। এখানে ‘অ্যাস্ট্রাল’ (Astral) রেস্তোরাঁয় উচ্চমানের খাবারের স্বাদ উপভোগ করা যেতে পারে।
যারা ভিন্ন কিছু চেষ্টা করতে চান, তারা ‘২২০ বিপিএম’ (220 BPM) নামের একটি রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন, যেখানে চোখের বাঁধন পরে একটি বিশেষ ভোজন অভিজ্ঞতা উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় গাইডদের সঙ্গে ‘অ্যাপেরিটিভ ট্যুর’-এর (aperitif tour) মাধ্যমে এখানকার সংস্কৃতি সম্পর্কেও ধারণা লাভ করা যেতে পারে।
অন্যদিকে, ইতালির (Italy) প্রাক্তন রাজধানী তুরিনে এখনো পুরনো স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন দেখা যায়। এখানকার প্রাসাদ এবং পোর্টিকোগুলো ইতালীয় আল্পসের (Italian Alps) পটভূমিতে এক দারুণ দৃশ্য তৈরি করে।
পর্যটকদের জন্য এখানে আকর্ষণীয় একটি বিষয় হলো, ১৭ই মে তারিখে ইউরোপিয়ান নাইট অফ দ্য মিউজিয়ামস (European Night of the Museums) অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অনেক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে রাতের বেলা প্রবেশের সুযোগ থাকে।
মিলান (Milan) শহরটি তার ফ্যাশন এবং ডিজাইন শিল্পের জন্য সুপরিচিত। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত এখানে ডিজাইন সপ্তাহ (Design Week) অনুষ্ঠিত হয়।
এই সময় ব্রেরা (Brera) এবং জোনা তোরতোনার (Zona Tortona) মতো এলাকাগুলো উন্মুক্ত গ্যালারিতে পরিণত হয়। এই সময়ে ব্রেরা আধুনিক আর্ট গ্যালারি (Brera Modern art gallery) ঘুরে আসা যেতে পারে, যা দীর্ঘ ৫০ বছর পর পুনরায় খোলা হয়েছে।
এছাড়া, বার বাসো-তে (Bar Basso) স্থানীয়দের সঙ্গে নেগ্রোনি পান করার মজাও উপভোগ করা যেতে পারে। মিলানে ইতালির বৃহত্তম নগর থার্মাল পার্ক, দে মন্তেল (De Montel), এপ্রিল মাসেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ভ্রমণের শর্তাবলী এবং টিকিটের মূল্য পরিবর্তনশীল হতে পারে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।