দৌড়বিদ জেস ওয়ার্নার-জুড: ‘এপিলিপ্সির কাছে হার মানতে রাজি নই!’

দীর্ঘ-পাল্লার দৌড়বিদ জেস ওয়ার্নার-জাড, যিনি খেলাধুলার জগতে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র, সম্প্রতি এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। গত বছর, ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ১০,০০০ মিটার ফাইনালের সময় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।

দৌড়ের মাঝপথে তার শরীর টলমল করতে শুরু করে এবং তিনি ট্র্যাকের উপর পড়ে যান। পরে জানা যায়, তিনি মৃগীরোগে আক্রান্ত।

এই ঘটনার পর, জেসের জীবনে আসে এক নতুন মোড়। শারীরিক অসুস্থতার সাথে লড়াই করে কীভাবে আবার আগের জীবনে ফেরা যায়, সেই কঠিন চ্যালেঞ্জ তিনি গ্রহণ করেন।

তার স্বামী রব, বাবা এবং বোন জডির সমর্থন ছিল এই লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার। পরিবারের এই অটল সমর্থন জেসকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ হতে সাহায্য করেছে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, জেস নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে শুরু করেন এবং জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনেন। খেলাধুলার জগতে ফিরে আসার জন্য তিনি কঠোর অনুশীলন শুরু করেন।

শুরুতে, সবকিছু কঠিন ছিল। দৌড়ানোর সময় তার শরীর দুর্বল হয়ে আসত এবং মাঝে মাঝে সবকিছু এলোমেলো লাগতো। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি।

ধীরে ধীরে, তিনি তার শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে শুরু করেন এবং আবারও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন।

প্রথমে, তিনি ছোটখাটো কিছু প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এরপর, ধীরে ধীরে তিনি বড় ইভেন্টগুলোতেও নাম লেখাতে শুরু করেন।

সম্প্রতি, বার্সেলোনা হাফ ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছিলেন এবং ভালো ফল করেছেন। এমনকি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পরেও তিনি ইউরোপের মধ্যে সেরা স্থান অর্জন করেন।

জেস ওয়ার্নার-জাড শুধু একজন দৌড়বিদ নন, তিনি একজন যোদ্ধা। মৃগীরোগের সাথে লড়াই করে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনো বাধাই মানুষকে আটকাতে পারে না।

তিনি এখন আবার ট্র্যাকের প্রতিযোগিতায় ফিরতে চান এবং নিজের শর্তে তার দৌড়জীবন শেষ করতে চান। আগামী সেপ্টেম্বরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

জেস মনে করেন, জীবন শুধু দৌড়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি তার পিএইচডি সম্পন্ন করার দিকেও মনোযোগ দিচ্ছেন।

সবকিছু ঠিক থাকলে, ডিসেম্বরে তিনি তার পড়াশোনা শেষ করবেন। জেসের এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা।

তিনি দেখিয়েছেন, প্রতিকূলতা যতই আসুক না কেন, সাহস এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে তা মোকাবেলা করা যায়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *