রহস্যময় ‘ইউর হাউস’: জন্মদিনের উপহার নাকি গভীর ধাঁধা?

“ইয়োর হাউস”: রহস্যে মোড়া এক ধাঁধার জগৎ

ধাঁধা খেলার জগৎ বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, যেখানে খেলোয়াড়দের বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই ধরনের খেলায়, খেলোয়াড়দের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে হয় এবং একটি গল্প উন্মোচন করতে হয়।

“ইয়োর হাউস” তেমনই একটি খেলা, যা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। খেলাটি তৈরি করেছে স্প্যানিশ স্টুডিও, প্যাট্রোনেস অ্যান্ড এসকোন্ডাইটেস।

গেমটির মূল ধারণা এসেছে একটি সত্য ঘটনা থেকে। ২০০০ সালের দিকে, নিউ ইয়র্কের এক ধনী দম্পতি তাদের অ্যাপার্টমেন্ট সংস্কারের জন্য স্থপতি এরিক ক্লফের সাথে যোগাযোগ করেন। তাদের আবদার ছিল, অ্যাপার্টমেন্টের দেয়ালে তাদের পরিবারের সম্পর্কে একটি কবিতা লুকানো হোক, অনেকটা টাইম ক্যাপসুলের মতো।

ক্লফ এই কাজটি করতে রাজি হন এবং ক্লায়েন্টদের অজান্তে অ্যাপার্টমেন্টে কিছু পরিবর্তন করেন।

গেমের গল্পটি আবর্তিত হয়েছে ডেবি নামের এক তরুণীকে নিয়ে। ডেবি তার ১৮তম জন্মদিনে জানতে পারে তার প্রেমিক তাকে তার best friend-এর সাথে cheat করেছে এবং তাকে বোর্ডিং স্কুল থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছে। এমন হতাশাজনক পরিস্থিতিতে সে একটি রহস্যময় পোস্টকার্ড পায়, যেখানে একটি চাবি এবং একটি ঠিকানা লেখা ছিল।

সেই ঠিকানা ধরে সে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে পৌঁছায়, যা নানা রহস্যে ঘেরা।

“ইয়োর হাউস” আসলে ২০২০ সালের গেম “আনমেমোরি”-র পূর্ববর্তী সংস্করণ। এই গেমে কমিক বইয়ের মতো চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা ড্যানিয়েল ক্লোয়েস (Ghost World) এবং জেইম হার্নান্দেজ (Love and Rockets)-এর মতো শিল্পীদের শৈলীর কথা মনে করিয়ে দেয়।

শিল্পী জন অ্যান্ডার টরেসের আঁকা ছবিগুলো খুবই আকর্ষণীয়, তবে খেলার বেশিরভাগ অংশ টেক্সট আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে, অনেকটা বইয়ের অধ্যায়গুলির মতো।

মাঝেমেধ্যে কিছু শব্দ হাইলাইট করা হয় এবং সেগুলোতে ক্লিক করে খেলোয়াড় নির্দিষ্ট ঘরে যেতে বা কোনো বস্তুর সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে।

“ইয়োর হাউস”-এর মূল আকর্ষণ হল এর জটিল ধাঁধাগুলো। খেলোয়াড়দের একটি গোপন প্যানেল খোলার জন্য পিয়ানোতে সুরের সঠিক ক্রমটি খুঁজে বের করতে হয়, অথবা ছবিগুলোর মধ্যে লুকানো প্যাটার্নগুলো খুঁজে বের করতে হয়।

প্রতিটি ধাঁধা সমাধান করতে খেলোয়াড়কে মনোযোগ দিতে হয় এবং নোট নিতে হতে পারে। গেমের তৃতীয় অধ্যায়টি বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, যেখানে গোপন করিডোর এবং আন্তঃসংযুক্ত ধাঁধার জাল রয়েছে।

রাতের বেলায় দেখার জন্য বিশেষ চশমা ব্যবহার করে লুকানো লেখা খুঁজে বের করার সুযোগ রয়েছে।

তবে, গেমটি শেষ পর্যন্ত তার গতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। শেষের দিকের ধাঁধাগুলো আগের মতো আকর্ষণীয় নয়।

গল্পের সমাধানও খুব একটা দৃঢ় নয়। যদিও বাড়ির ভেতরের ধাঁধার ধারণাটি বেশ আকর্ষণীয়, যা খেলোয়াড়দের আকৃষ্ট করে।

“ইয়োর হাউস” ধাঁধা প্রেমীদের জন্য একটি চমৎকার গেম হতে পারে।

গেমটি গত ২৭শে মার্চ মুক্তি পেয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *