গাজায় জবরদখলের হুমকি নেতার, হামাসের বিরুদ্ধে ফুঁসছে ফিলিস্তিনিরা।
গাজায় জবরদখলের হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাস যদি এখনো আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে গাজার কিছু অংশ দখল করে নেওয়া হতে পারে বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
নেতানিয়াহুর এই ঘোষণার মধ্যেই গাজায় হামাস বিরোধী বিক্ষোভ দেখা গেছে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে গাজায় সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করে ইসরায়েল। এর জের ধরে সেখানে অস্থিরতা আরও বেড়েছে।
নেতানিয়াহু সম্প্রতি পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, “হামাস যদি জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি না হয়, তবে আমরা তাদের উপর আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব। এর মধ্যে এলাকা দখলের মতো বিষয়ও রয়েছে।”
অন্যদিকে, হামাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, জিম্মিদের উদ্ধারে ইসরায়েল যদি কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তাদের মৃত্যু হতে পারে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যখনই ইসরায়েলি বাহিনী জিম্মিদের উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তখনই তারা তাদের কফিনবন্দী হয়ে ফিরিয়েছে।”
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ২৫১ জন জিম্মি হয়।
তাদের মধ্যে এখনো ৫৮ জন গাজায় বন্দী রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ধারণা, এদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে।
এদিকে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনিরা হামাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।
তারা যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি হামাসকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, বহু মানুষ “হামাস নিপাত যাক” এবং “সন্ত্রাসী হামাস নিপাত যাক” বলে শ্লোগান দিচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা “যুদ্ধ বন্ধ করো” এবং “আমরা শান্তি চাই” লেখা ব্যানার বহন করে।
বেইত লাহিয়া এলাকার অধিবাসীদের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন জানানো হয়।
তারা হামাসের বিরোধীদের দ্বারা “জনগণের বৈধ দাবি” অপব্যবহারের তীব্র নিন্দা করেন।
অন্যদিকে, বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত নয় জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ বিতরণের সময় চালানো হামলায় এক নারী ও তার মেয়ের মৃত্যু হয়।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক অভিযান শুরুর পর এক সপ্তাহে প্রায় ১ লক্ষ ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজায় মানবিক সহায়তা সামগ্রীর মজুদও দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ বছরের জানুয়ারির মধ্যে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লক্ষ ১৩ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।