তুরস্কে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ: পুলিশের আক্রমণে উত্তপ্ত পরিস্থিতি।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের শক্তি প্রয়োগের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে চলা এই বিক্ষোভের মূল কারণ হলো ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামোগ্লুকে গ্রেফতার করা।
বিরোধী দল মনে করে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই তাকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (বৃহস্পতিবার) সকালে, মধ্যপ্রাচ্য টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির (Middle East Technical University) ছাত্ররা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হয়। খবর অনুযায়ী, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের কাছে একটি বিবৃতি পাঠ করার চেষ্টা করছিল।
কিন্তু পুলিশ তাদের উপর জলকামান, টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হয়।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ইমামোগ্লুর দল, রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সংসদ সদস্য মেলিহ মেরিক। তিনি জানান, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানোর সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
তিনি আরও বলেন, “আমার ছাত্র বন্ধুরা কেবল একটি প্রেস বিবৃতি দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পুলিশ তা করতে দেয়নি, যার ফলশ্রুতিতে এমনটা হয়েছে।”
আন্দোলনকারীদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন সিএইচপি’র নেতা ওজগুরু ওজেল। তিনি এর আগে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, পুলিশ যদি বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হয়, তবে তিনি আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবেন।
ইতিমধ্যে, তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ছয় দিনে বিক্ষোভের কারণে অন্তত ১,৪০০ জনকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ইস্তাম্বুলের সিটি হলের বাইরেও সমাবেশ করেছে।
এছাড়াও, কাদিকো এবং সিসলিসহ বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে, কারাগারে বন্দী অবস্থায় একরাম ইমামোগ্লু এক বিবৃতিতে পুলিশের এই ধরনের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি তাদের পুলিশ বলতে রাজি নই, কারণ আমার সম্মানিত পুলিশ সদস্যরা জাতির শিশুদের প্রতি এমন নিষ্ঠুরতা করতে পারে না।”
উল্লেখ্য, একরাম ইমামোগ্লু তুরস্কের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সিএইচপি’র প্রার্থী হতে পারেন। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে তিনি বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন।
২০১৯ সালে তুরস্কের বৃহত্তম শহরের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এরদোয়ানের জন্য এটি ছিল একটি বড় ধাক্কা।
বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করার সময় আটক হওয়া আটজন সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মিডিয়া অ্যান্ড ল’ স্টাডিজ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজনকে ইস্তাম্বুলে এবং একজনকে পশ্চিমা শহর ইজমির থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস