ফ্যাশনে ‘বুম বুম’ ট্রেন্ড: ঝলমলে দুনিয়ার গোপন কথা!

শিরোনাম: ফ্যাশনের জগতে ‘বুম বুম’ সংস্কৃতি: জৌলুস আর উদ্বেগের যুগলবন্দী?

ফ্যাশন দুনিয়ায় আবার কি পুরোনো দিনের ঝলমলে দিন ফিরে আসছে? সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ফ্যাশন অঙ্গনে ‘বুম বুম’ নামের একটি নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেখানে ஆடम्बरপূর্ণ পোশাক, বিশেষ করে উজ্জ্বল রং এবং অতিরিক্ত সজ্জার ব্যবহার বাড়ছে। এই নতুন ধারায়, যেন ১৯৮০ দশকের ফ্যাশনের মোড়কে ফিরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এই ‘বুম বুম’ ধারণার মূল কথা হলো – অতিরিক্ততা। এই ফ্যাশনে, পোশাকের মাধ্যমে নিজেদের ঐশ্বর্য এবং সামাজিক অবস্থান তুলে ধরা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডিজাইনার পোশাক, লোফার জুতো, এবং উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার এই ফ্যাশনের মূল বৈশিষ্ট্য। একদিকে যখন সমাজের একটা বড় অংশ জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে চিন্তিত, তখন ফ্যাশনের এই দিক পরিবর্তন অনেকের কাছেই কৌতূহলের বিষয়।

ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তনের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। একদিকে যেমন অতিমারীর পর মানুষজন তাদের পোশাকের মাধ্যমে নিজেদের প্রকাশ করতে চাইছে, তেমনই সমাজের কিছু অংশের মধ্যে পুরনো দিনের জৌলুসপূর্ণ জীবনযাত্রার প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। অর্থনৈতিক অস্থিরতা, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান খরচ এবং কর্মসংস্থানের বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে অনেক তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, ‘বুম বুম’ ফ্যাশন যেন এক ধরনের বিদ্রোহ, যা প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে।

এই ফ্যাশন ট্রেন্ডে, বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর পোশাকের চাহিদা বাড়ছে, যা মূলত উচ্চবিত্ত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে, এর প্রভাব ধীরে ধীরে সমাজের অন্যান্য স্তরেও পড়ছে। সিনেমায়, তারকাদের পোশাকেও এই ধরনের ঝলমলে শৈলী দেখা যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, হলিউডের সিনেমায় ব্যবহৃত পোশাক এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারকাদের সাজসজ্জায় এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘বুম বুম’ ফ্যাশন কেবল একটি পোশাকের ধারা নয়, বরং এটি একটি মানসিকতাও। এটি একদিকে যেমন বিলাসিতার প্রতীক, তেমনই বর্তমান সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে থাকা উদ্বেগের প্রতিচ্ছবি। ১৯৮০-এর দশকে যেমন অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যে ফ্যাশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, তেমনই বর্তমান সময়েও এই ধরনের ফ্যাশন পরিবর্তনের কারণ হলো সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন।

তবে, এই ফ্যাশন ট্রেন্ড কত দিন স্থায়ী হবে, তা বলা কঠিন। কারণ, ফ্যাশন সবসময়ই পরিবর্তনশীল। সমাজের রুচি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবের ওপর এর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। তবে, ফ্যাশন যে সমাজের প্রতিচ্ছবি, তা বলাই বাহুল্য।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *