পেন্টাগনের ডিইআই পরিবর্তনে সংখ্যালঘুদের মধ্যে সেনা-ভর্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কা!

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে ‘বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি’ (Diversity, Equity, and Inclusion – DEI) বিষয়ক নীতি সংস্কারের কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সেনা সদস্য নিয়োগে ভাটা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্যরা।

খবর অনুযায়ী, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাদের উদ্বেগের কারণ হলো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নেওয়া কিছু পদক্ষেপ, যা মূলত এই ডিইআই নীতিগুলোর বিরোধী ছিল।

সামরিক বাহিনীর দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য হলো—এখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ একত্রিত হয়ে কাজ করে, যা তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং দেশপ্রেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের ডিইআই নীতি বিরোধী পদক্ষেপের কারণে অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সামরিক বাহিনীর ওয়েবসাইটে কৃষ্ণাঙ্গ, নারী, এলজিবিটিকিউ+ এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের অবদান নিয়ে প্রকাশিত অনেক তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

এমনকি, ওয়েস্ট পয়েন্টের মতো সামরিক একাডেমিতেও কিছু ক্লাব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ প্রকৌশলী এবং নারী প্রকৌশলীদের সংগঠন ছিল।

এই পরিবর্তনের ফলে সামরিক বাহিনীর পরিবেশ অনেকের কাছেই বৈষম্যমূলক হয়ে উঠছে।

অনেক প্রবীণ সেনা সদস্য মনে করেন, এর ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং নারীদের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ কমতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, একজন প্রাক্তন নৌ সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি তাঁর দুই মেয়েকে এখন আর সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে উৎসাহিত করছেন না।

তাঁর মতে, বর্তমান প্রশাসন যেন সংখ্যালঘুদের প্রতি একটি বার্তা দিচ্ছে—‘তোমাদের এখানে আসার প্রয়োজন নেই’।

সামরিক ইতিহাসবিদ এবং অভিজ্ঞজনদের মতে, ডিইআই বিষয়ক নীতির পরিবর্তনের ফলে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে, যা সামরিক বাহিনীর কার্যকারিতা বাড়াতে কোনো সাহায্য করবে না।

বরং, এতে সমাজে বিভেদ আরও বাড়বে।

তাঁরা মনে করেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত সামরিক বাহিনীর সক্ষমতার চেয়ে সাংস্কৃতিক যুদ্ধের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

এই পরিবর্তনের ফলে যারা বর্তমানে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আছেন, তাঁদের মধ্যেও হতাশা সৃষ্টি হতে পারে।

কারণ, তাঁদের পূর্বপুরুষদের অবদানকে যেন অস্বীকার করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ এখন আর নেই।

অনেক ক্ষেত্রে, এই পরিবর্তনগুলো এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি করছে, যেখানে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে এবং তাঁদের পদোন্নতির সুযোগও সীমিত হয়ে পড়ছে।

তবে, অনেকে এটাও মনে করেন যে, অর্থনৈতিক কারণে সংখ্যালঘুদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা এখনো রয়েছে।

কারণ, অনেকের কাছে এটি ভালো জীবন ধারণের একমাত্র উপায়।

যদিও, ডিইআই নীতি সংস্কারের ফলে সংখ্যালঘুদের জন্য সামরিক বাহিনীতে কাজ করা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *