যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)-এর সাবেক দুই ডেমোক্রেট সদস্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে, যা একটি পুরনো আইনি নীতির লঙ্ঘন।
বৃহস্পতিবার দায়ের করা এই মামলায়, সাবেক এই দুই কমিশনার তাদের বহিস্কারাদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
জানা গেছে, গত ১৮ই মার্চ এফটিসি কমিশনার আলভারো বেডোয়া এবং রেবেকা কেলি স্লোটারকে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে একটি ইমেইল পাঠানো হয়। ওই ইমেইলে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়।
কারণ হিসেবে বলা হয়, তাদের ‘এফটিসি-তে কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রশাসনের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়’। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৮৫ সালের একটি সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, কোনো কারণ ছাড়া প্রেসিডেন্ট এফটিসি কমিশনারদের বরখাস্ত করতে পারেন না।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, এই দুই কমিশনারের বরখাস্ত করার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাদের দাবি, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ছিল ক্ষমতার অপব্যবহার এবং স্বাধীন সংস্থাগুলোর ওপর হস্তক্ষেপের একটি প্রচেষ্টা।
আলভারো বেডোয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে মন্তব্য করেন, ‘প্রেসিডেন্ট এফটিসি-কে তার বন্ধুদের হাতের পুতুল বানাতে চেয়েছিলেন।’
এই ধরনের সুরক্ষা ফেডারেল রিজার্ভ ও ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশনের মতো বিভিন্ন স্বাধীন সংস্থায়ও বিদ্যমান। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের ইমেইলের ভাষা ১৯৩৫ সালের ‘হামফ্রিস এক্সিকিউটর বনাম ইউনাইটেড স্টেটস’ মামলার সময়কার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের বিতর্কিত বার্তার প্রায় অনুরূপ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়ায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ‘সরকারের বিদ্যমান আইনের অধীনে প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয়।’ মামলায় কমিশনারদের স্বপদে পুনর্বহাল করার আবেদন জানানো হয়েছে, যাতে তারা তাদের মেয়াদ শেষ করতে পারেন।
স্লোটারের মেয়াদ ২০২৯ সাল পর্যন্ত এবং বেডোয়ার মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত ছিল।
মামলায় ট্রাম্প ছাড়াও এফটিসি চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রু ফার্গুসন, রিপাবলিকান এফটিসি কমিশনার মেলিসা হলোয়াক এবং এফটিসি’র নির্বাহী পরিচালক ডেভিড রবিন্সকে বিবাদী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জো বাইডেন ২০২৩ সালে রিপাবলিকান অ্যান্ড্রু ফার্গুসনকে কমিশনার হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। ফার্গুসন সিনেট কমিটিকে বলেছিলেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে চলবেন।
তবে স্লোটার ও বেডোয়ার বরখাস্তের পর ফার্গুসন এক বিবৃতিতে জানান, ট্রাম্পের কমিশনারদের অপসারণের ‘সাংবিধানিক অধিকার’ রয়েছে এবং এটি ‘সরকারের গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয়’।
তথ্য সূত্র: সিএনএন