ছোট্ট একটি বিড়ালছানাকে দেখলে কখনও কি আপনার এমনটা মনে হয়েছে যে, ইচ্ছে করছে প্রাণীটিকে দু’হাত ভরে জড়িয়ে ধরি, নরম তুলতুলে শরীরটাতে আলতো করে টোকা দিই? অথবা, কোনো শিশুর নিষ্পাপ মুখ দেখে তাকে আদরে ভরিয়ে দিতে মন চায়? এমন অনুভূতিকে মনোবিজ্ঞানীরা ‘কিউট আগ্রাসন’ (cute aggression) বলে থাকেন।
এবার এই অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে ‘গিগিল’ (Gigil) নামের একটি শব্দ যোগ হলো অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে।
‘গিগিল’ শব্দটি এসেছে ফিলিপাইনের একটি ভাষা, তাগালগ থেকে। এই শব্দের অর্থ হলো, কোনো সুন্দর জিনিস দেখলে তাকে চেপে ধরার বা আদর করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
অভিধানে শব্দটিকে বিশেষ্য এবং বিশেষণ উভয় রূপেই ব্যবহার করা যাবে। যেমন, “That puppy is making me gigil.” অর্থাৎ, “কুকুরছানাটা আমাকে ‘গিগিল’ করাচ্ছে।”
অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান (OED) ইংরেজি ভাষার অন্যতম বৃহৎ এবং নির্ভরযোগ্য একটি অভিধান। এতে প্রায় ৬ লক্ষ শব্দ রয়েছে।
প্রতি বছরই অভিধানটির সম্পাদকরা বিভিন্ন ভাষা থেকে আসা হাজারো শব্দ যোগ করার কথা বিবেচনা করেন। নিজেদের গবেষণা এবং বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া শব্দের তালিকা তৈরি করার পরেই এই কাজটি করা হয়।
শুধু ‘গিগিল’ নয়, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার আঞ্চলিক ভাষা থেকে আসা ‘আলামাক’ শব্দটিও যুক্ত হয়েছে অভিধানে।
‘আলামাক’ একটি বিস্ময় বা বিরক্তি প্রকাশের শব্দ। এছাড়াও, বাইরের পরিবেশে বসে বিয়ার পান করার অনুভূতি বোঝাতে নরওয়ের ‘ইউটেপিলস’ (utepils) এবং জাপানি ভাষায় ‘কোমোরিবি’ (komorebi) শব্দ দুটিও যুক্ত হয়েছে।
‘কোমোরিবি’ শব্দটি গাছের পাতা ভেদ করে আসা সূর্যের আলো বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
ভাষাবিদরা মনে করেন, যখন ইংরেজিভাষীরা অন্য ভাষা থেকে কোনো শব্দ ধার করে তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করেন, তখন সেই শব্দটি ধীরে ধীরে ইংরেজি ভাষারই একটি অংশ হয়ে যায়।
নতুন সংযোজনগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার বিভিন্ন খাবারের নামও রয়েছে।
যেমন, কায়া টোস্ট (নারিকেল দুধ, ডিম, চিনি ও পান্ডান পাতা দিয়ে তৈরি করা এক প্রকারের জ্যাম যা টোস্টের সাথে পরিবেশন করা হয়), ফিশ হেড কারি (চীনা ও দক্ষিণ ভারতীয় একটি পদ), এবং স্টিমবোট (পাতলা করে কাটা মাংস ও সবজির স্যুপ)।
এছাড়া, ফিলিপাইনের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত ‘ভিডিওকে’ (গান গাওয়ার একটি পদ্ধতি) এবং ‘সালাকোট’ (এক ধরনের টুপি) শব্দগুলোও যুক্ত হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়ারল্যান্ড থেকেও কিছু শব্দ যুক্ত করা হয়েছে।
ভাষা সবসময়ই পরিবর্তনশীল। বিভিন্ন সংস্কৃতি থেকে শব্দ ধার করে ইংরেজি ভাষা তার এই পরিবর্তনকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করে তুলছে।
তথ্য সূত্র: The Guardian