মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেete হেগসেথ সম্প্রতি ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সাক্ষাতে তিনি চীন থেকে আসা সম্ভাব্য হুমকির মোকাবিলায় ফিলিপাইনের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মধ্যে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এই সমর্থন জানানো হলো।
বৈঠকে হেগসেথ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, এই অঞ্চলে, বিশেষ করে ফিলিপাইনে চীনের কমিউনিস্ট শাসনের কারণে যে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র উন্নত সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করতে চাইছে। যদিও এই সামরিক সক্ষমতাগুলো ঠিক কী ধরনের, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
তবে জানা গেছে, তাইওয়ানের কাছে অবস্থিত বাতেনেস-এ যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনের মধ্যে বিশেষ সামরিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।
ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্পর্ক জোরদারের পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে, যখন দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইন ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
চীন এই সমুদ্রের প্রায় পুরো অংশের ওপর নিজেদের মালিকানা দাবি করে থাকে, যদিও আন্তর্জাতিক আদালত এর বিরোধিতা করেছে।
হেগসেথ বলেন, বন্ধু হিসেবে উভয় দেশকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে, যাতে এই অঞ্চলে নৌ চলাচলে কোনো বাধা না আসে এবং কোনো ধরনের সংঘাত এড়ানো যায়।
চীনের প্রভাব বিস্তারের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে, যার মধ্যে ফিলিপাইন অন্যতম।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস ২০২২ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ম্যানিলা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও গভীর হয়েছে।
উভয় দেশই দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সম্প্রতি সাবিনা শোয়ালের কাছে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা এর আগে সতর্ক করে বলেছিলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের ওপর কোনো সশস্ত্র হামলা হলে, তা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় আসবে।
এর মাধ্যমে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান আরও বাড়ানো হয়েছে এবং ফিলিপাইনে মার্কিন সেনাদের জন্য আরও ৯টি ঘাঁটি ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এদিকে, হেগসেথের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন উভয় দেশের সামরিক বাহিনী এপ্রিল মাসে যৌথ নৌ ও বিমান মহড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অন্যদিকে, হেগসেথের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, হোয়াইট হাউজের অভ্যন্তরীণ একটি মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে তিনি ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেন।
যদিও এই বিষয়ে এখনো ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, হেগসেথের পক্ষেই কথা বলেছেন। তিনি জানান, হেগসেথ ভালো কাজ করছেন এবং এই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান