হেগসেথের আরবি ট্যাটু নিয়ে বিতর্ক, মুসলিম বিশ্বে নিন্দার ঝড়!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব পদে আসীন পিট হেগসেথের শরীরে আরবি ভাষায় খোদাই করা একটি ট্যাটু নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, হেগসেথের হাতে ‘কাফির’ শব্দটি লেখা রয়েছে।

আরবি ভাষায় ‘কাফির’ শব্দের অর্থ হলো ‘অবিশ্বাসী’ বা ‘ইসলাম বিরোধী’। এই ট্যাটু নিয়ে অনেকে হেগসেথের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে, মুসলিম-বিদ্বেষের স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে এই ট্যাটু, বিশেষ করে এমন একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে যিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, হেগসেথের এই ট্যাটু বিতর্কিত হওয়ার কারণ হলো এর বিষয়বস্তু। ‘কাফির’ শব্দটি ইসলামে অবিশ্বাসী বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সমালোচকদের মতে, এই ধরনের ট্যাটু একজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তার শরীরে থাকাটা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষের পরিচায়ক।

কারণ, এর মাধ্যমে এমন একটি ধারণা তৈরি হতে পারে যে, সামরিক সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি হয়তো মুসলিম-বিদ্বেষী মনোভাবাপন্ন।

বিষয়টি নিয়ে নিউইয়র্কের ফিলিস্তিনপন্থী কর্মী নার্দিন কিসওয়ানি বলেন, “এই ট্যাটু কোনো ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয় নয়, বরং মার্কিন যুদ্ধগুলোর তদারককারীর ইসলামভীতি বা ইসলামোফোবিয়ার স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।” তাঁর মতে, “কাফির’ শব্দটিকে চরম-ডানপন্থী ইসলামবিদ্বেষীরা মুসলমানদের উপহাস ও হেয় করার জন্য ব্যবহার করে থাকে।

এটা তাঁর ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয় নয়, বরং এই বিশ্বাসগুলো কীভাবে নীতি নির্ধারণ করে, সামরিক সিদ্ধান্ত তৈরি করে, নজরদারি কার্যক্রম ও মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের জন্ম দেয়, সেটাই উদ্বেগের কারণ।”

শুধু তাই নয়, হেগসেথের শরীরে এর আগেও বিতর্কিত ট্যাটুর সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁর ডান বাইসেপে ‘ডিউস ভল্ট’ (Deus Vult) খোদাই করা আছে, যা ল্যাটিন ভাষায় লেখা একটি শব্দগুচ্ছ।

এর অর্থ হলো ‘ঈশ্বর তা চান’। ধারণা করা হয়, ক্রুসেডের সময় এই শব্দটি যুদ্ধ জয়ধ্বনি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এছাড়াও, তাঁর বুকে জেরুজালেম ক্রস বা ক্রুসেডার ক্রসও দেখা যায়, যা খ্রিস্টান ক্রুসেডের সময় জনপ্রিয় হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, হেগসেথের এই ট্যাটু বিতর্ক এমন এক সময়ে সামনে এল, যখন তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন কংগ্রেসে ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি উঠেছে, কারণ তিনি সম্প্রতি ইয়েমেনে বোমা হামলার পরিকল্পনা সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন।

এমনকি তাঁর পদত্যাগও দাবি করেছেন কোনো কোনো কংগ্রেস সদস্য।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *