ইউরোপের অসাধারণ রেস্টুরেন্ট: যেখানে খাবারের স্বাদ ভাষায় বাঁচে!

ইউরোপ ভ্রমণে খাদ্যরসিকদের জন্য দারুণ কিছু অভিজ্ঞতার সন্ধান দিয়েছেন পাঠকেরা। একদিকে যেমন রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ স্বাদের সন্ধান, তেমনই আবার কোথাও মিলবে আধুনিকতার ছোঁয়া।

আসুন, তেমনই কিছু অসাধারণ খাবারের ঠিকানা জেনে নেওয়া যাক:

প্রথমেই আসা যাক বসনিয়ার সারায়েভো শহরে। এখানকার ‘বুরেগডজিনিকা’ নামের একটি দোকানে পাওয়া যায় বোসনিয়ান বুরেক (Burek)।

এটি মূলত ফিলো পেস্ট্রি দিয়ে তৈরি একটি খাবার, যার ভেতরে আলু, মাংস অথবা পালং শাক ও পনিরের পুর দেওয়া হয়। বুরেক-এর সাথে দই এবং বিয়ার (pivo) -এর যুগলবন্দী যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেয়।

দামেও বেশ সস্তা, প্রায় ৫০০ গ্রামের জন্য খরচ হবে ৬০০ টাকার মতো (মে মাসের বিনিময় হার অনুযায়ী)।

অস্ট্রিয়ার আল্পস-এ ট্রেকিং করতে গেলে ‘রডলহütte’ নামের ক্যাফেতে ঢুঁ মারতেই পারেন। এখানকার আকর্ষণ হলো মজাদার আপেল স্ট্রুডেল (apple strudel) এবং Märzen Lager নামক বিয়ার।

পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে এইসব খাবার মন ভরিয়ে দেয়। শীতকালে এখানে স্কি করারও ব্যবস্থা আছে।

গ্রিসের এথেন্সে অবস্থিত ‘সভুরা’ (Svoura) রেস্টুরেন্টটি যেন এক অন্যরকম জগৎ। এখানে গ্রিক খাবারের নানারকম পদ পাওয়া যায়, যার মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন ধরনের হুমুস (hummus)।

খাবারের মেনু খুবই আকর্ষণীয় এবং দামও বেশ সাশ্রয়ী, প্রতি পদের দাম প্রায় ৬০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে।

ফ্রান্সের গ্রেনোবলে (Grenoble) ‘আ কনফেস’ (A Confesse) -এ রয়েছে ফন্ডু (fondue) উপভোগ করার দারুণ সুযোগ।

এখানে একটি ‘কনফেশন চেম্বার’-এর মধ্যে দিয়ে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে হয়, যা একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা দেয়। রুটি আসে সিলিং থেকে ঝুলন্ত ঝুড়িতে, যা টেনে নামাতে হয়।

সব মিলিয়ে, এটি একটি স্মরণীয় ডাইনিং অভিজ্ঞতা।

ইতালির বাসিলিকাটা প্রদেশের মন্ট পোলিনো ন্যাশনাল পার্কের কাছে ‘আগ্রিতুরিসমো কনসার্ভা দেল পোলিনো’ (Agriturismo Conserva del Pollino) -তে মেনু ছাড়াই পরিবেশন করা হয় স্থানীয় ও ঐতিহ্যপূর্ণ নানা খাবার।

এখানে ব্রেড, অ্যান্টিপাস্তি, হাতে তৈরি পাস্তা এবং গ্রিল করা মাংসের স্বাদ নেওয়া যেতে পারে। জনপ্রতি প্রায় ৩,৭০০ থেকে ৪,৩০০ টাকার মধ্যে এই খাবারের অভিজ্ঞতা পাওয়া যেতে পারে।

পর্তুগালের ওলহাও-এ অবস্থিত ‘কাসা আমোর’ (Casa Amor) -এ পাওয়া যায় দারুণ সব পেস্ট্রি। এখানকার ফল-যুক্ত টার্ট এবং ক্যাপুচিনো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ফ্রান্সের নরম্যান্ডি উপকূলের গ্র্যান্ডকাম্প-মাইসি-তে অবস্থিত ‘লা মারে’ (La Marée) রেস্টুরেন্টটি সি-ফুড প্রেমীদের জন্য আদর্শ।

এখানে স্ক্যালপ (scallops), সি বাস (sea bass), এবং টমেটো, রসুন ও পার্সলে দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ সস-এর সাথে পরিবেশিত খাবার সত্যিই অসাধারণ।

এখানে জনপ্রতি প্রায় ৫,৭০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।

স্পেনের সান্টান্ডারে (Santander) রেলস্টেশনের বারে পরিবেশিত হয় নানা ধরনের অমলেট। এখানকার আলু, গার্লিক ক্রিম সস এবং পারমা হ্যাম-এর অমলেট খুবই জনপ্রিয়।

যুক্তরাজ্যের রিপন এলাকার ‘মারিও’স’ (Mario’s) -এ পাওয়া যায় আসল ইতালীয় খাবার। এখানকার লাসাগনা এবং পিৎজা বিশেষভাবে সুস্বাদু।

নরওয়ের ট্রনহেইম-এর কাছে ‘ট্রোল’ (Troll) -এ নর্ডিক খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। এখানকার পিননেক্যট (lamb ribs) এবং ক্লাউডবেরি-র (cloudberries) স্বাদ ভোলার মতো নয়।

ইউরোপের এই রেস্টুরেন্টগুলো খাদ্যরসিকদের জন্য সত্যিই অসাধারণ কিছু অভিজ্ঞতা দিতে পারে।

(লক্ষ্য করুন: উল্লেখিত সব দাম মে মাসের বিনিময় হার অনুযায়ী приблизиক।)

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *