নতুন একটি টিভি সিরিজ, ‘দ্য স্টুডিও’, হলিউডের ভেতরের জগৎ নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক গল্প নিয়ে এসেছে। অ্যাপল টিভিতে মুক্তি পাওয়া এই সিরিজটি নির্মাণ করেছেন সেথ রোগেন ও ইভান গোল্ডবার্গ।
সিনেমাপাড়ার নানা দিক, ক্ষমতা, খ্যাতি আর টিকে থাকার লড়াই— সবকিছুই এতে তুলে ধরা হয়েছে। যারা সিনেমা ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই সিরিজটি একটি আকর্ষণীয় বিষয় হতে পারে।
হলিউড সবসময়ই নিজেকে নিয়ে ব্যঙ্গ করতে ভালোবাসে। ‘সানসেট বুলেভার্ড’ কিংবা ‘বার্টন ফিঙ্ক’-এর মতো সিনেমাগুলো সেই প্রমাণ দেয়।
এই ধরনের সিনেমাগুলো একদিকে যেমন দারুণ জনপ্রিয় হয়, তেমনই অনেক সময় কিছু দুর্বলতাও দেখা যায়। অনেক পরিচিত মুখদের আনাগোনা, অতিরিক্ত অর্থ খরচ, এমনকি গল্পের দুর্বলতাও দেখা যেতে পারে। ‘দ্য স্টুডিও’ তেমনই একটি সিরিজ, যেখানে এইসব বিষয়গুলো বেশ ভালোভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সিরিজটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেথ রোগেন, যিনি একজন স্টুডিওর নির্বাহীর ভূমিকায় রয়েছেন। তিনি ভালো সিনেমা বানাতে চান, কিন্তু তার বস (ব্রায়ান ক্র্যানস্টন) তাকে একটি ‘কুল-এইড’ সিনেমা বানানোর জন্য চাপ দেন।
এরপর শুরু হয় তার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। কিভাবে একটি ভালো সিনেমা বানাবেন, যেখানে বাণিজ্যিক চাহিদাও বজায় থাকবে— এই নিয়ে তার সংগ্রাম।
সিরিজটিতে হলিউডের ভেতরের অনেক গোপন কথা তুলে ধরা হয়েছে। খ্যাতি, ক্ষমতা আর টিকে থাকার লড়াইয়ের পেছনের গল্পগুলো দর্শকদের কাছে নতুন করে ধরা দিয়েছে।
নির্মাতারা যেন তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই এই গল্পগুলো তৈরি করেছেন, যা দর্শকদের কাছে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
তবে, সবকিছু সত্ত্বেও, ‘দ্য স্টুডিও’ বর্তমান হলিউডের কঠিন সময়টাকেও তুলে ধরেছে।
সিনেমা হলগুলোতে দর্শক কমে যাওয়া, ইউটিউব ও টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াই— এই বিষয়গুলো সিরিজের গল্পে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। হলিউডের এই অস্থির পরিস্থিতি, যেন সিনেমা নামক শিল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গভীর উদ্বেগের চিত্র।
সিরিজটি যে একেবারে ত্রুটিমুক্ত, তা নয়। কিছু অংশে গল্প কিছুটা ধীরগতির মনে হতে পারে।
তবে সামগ্রিকভাবে, ‘দ্য স্টুডিও’ হলিউডের ভেতরের জগৎ সম্পর্কে একটি ধারণা দেয় এবং দর্শকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। যদি হলিউডের ভবিষ্যৎ সত্যিই কঠিন হয়, তবে এই সিরিজটি সম্ভবত সেই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান