ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। রিখটার স্কেলে ৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্ডালাই।
ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল খুবই কম, মাত্র ১০ কিলোমিটার। এর ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক সহ বিভিন্ন স্থানেও এর কম্পন অনুভূত হয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)-এর মতে, ভূমিকম্পটি ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেটের মধ্যে “স্ট্রাইক-স্লিপ ফল্টিং”-এর কারণে হয়েছে। অর্থাৎ, টেকটনিক প্লেটগুলি একে অপরের পাশ দিয়ে ঘর্ষণের ফলে এই কম্পন সৃষ্টি হয়েছে।
এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইং ফল্ট অঞ্চলে। ভূমিকম্পের কারণে রাস্তাঘাট ফেটে গেছে এবং বহু বাড়িঘরের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পটি অগভীর হওয়ায় এর প্রভাব মারাত্মক হতে পারে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিল ম্যাকগুইর জানিয়েছেন, “এই মাত্রার ভূমিকম্পের ধাক্কা সহ্য করার মতো নির্মাণশৈলী সম্ভবত সেখানে নেই। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।”
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার (সিইএনসি)-এর হিসাব অনুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৯। চীনের ইউনান প্রদেশেও এর কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এই অঞ্চলে আগে বেশ কয়েকবার বড় ভূমিকম্প হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৫৬ সালে এখানে এমন ঘটনা ঘটেছিল।
ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের (বিজিএস) গবেষক ড. রজার মুসন বলেছেন, “এই অঞ্চলের ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনশীল করে তৈরি করা হয়নি। তাই এমন ভূমিকম্প হলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে এবং হতাহতের সংখ্যাও বেশি হয়।”
ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। উদ্ধারকর্মীদের কাজ সহজ করার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় ভূমিকম্প সহনশীল ভবন তৈরি এবং সচেতনতা বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশেরও ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান