আলোচনায় সোনী বেকার: ফাস্ট বোলিংয়ে মুগ্ধতা ছড়ানোর স্বপ্ন!

বাংলার ক্রিকেটের আকাশে নতুন তারা: সনি বেকার, গতির ঝড় আর স্বপ্নের উড়ান।

ইংলিশ ক্রিকেটে এক নতুন তারকার আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি হলেন সনি বেকার, যিনি বর্তমানে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলছেন।

২২ বছর বয়সী এই তরুণ পেসার তার গতির জন্য এরই মধ্যে ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছেন। সম্প্রতি, গায়ানায় অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সুপার লিগে তিনি ঘণ্টায় ১৪৮.৭ কিলোমিটার বেগে বল করে নিজের জাত চিনিয়েছেন।

সনি বেকারের বেড়ে ওঠাটা যেন রূপকথার মতো। ডেভনের বয়সভিত্তিক দল থেকে উঠে আসা এই পেসার শুরুতে এতটা সমন্বিত ছিলেন না।

১৩ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি ভালোভাবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়াও করতে পারতেন না। তবে কঠোর পরিশ্রম আর একাগ্রতা তাকে আজকের অবস্থানে এনে দিয়েছে।

১৭ বছর বয়সে তিনি সোমারসেটের একাডেমিতে সুযোগ পান এবং ১৮ বছর বয়সে পেশাদার চুক্তি করেন।

সনি শুধু গতির ওপর নির্ভরশীল নন। তিনি খেলাটাকে গভীরভাবে ভালোবাসেন এবং একজন পরিপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়তে চান।

তার আদর্শ দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইন। স্টেইনের বোলিংয়ের ধরন, মাঠের আগ্রাসন, এবং দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হওয়া—এসব কিছুই সনিকে অনুপ্রাণিত করে।

তিনি চান, তার বোলিং দেখার জন্য যেন দর্শকরা খেলা দেখতে বার থেকে বেরিয়ে আসে, যেমনটা সবাই মার্ক উডের খেলা দেখতে আসে।

সনির সাফল্যের পেছনে রয়েছে তার অধ্যবসায় এবং খেলার প্রতি গভীর মনোযোগ। তিনি শুধু ফাস্ট বোলিংয়েই মনোনিবেশ করেননি, বরং কিভাবে ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হয়, সে বিষয়েও তার আগ্রহ রয়েছে।

তিনি বিভিন্ন গ্রাউন্ডের মাপ, বল গ্রিপ করার কৌশল, এবং ব্যাটসম্যানদের বিশ্লেষণ নিয়ে বিস্তারিত নোট রাখেন। এই বিষয়গুলো তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।

সনির সাফল্যের পথে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন আরও অনেকে। তিনি ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের ভিডিও দেখে বড় হয়েছেন।

ফ্লিনটফের কোচিং এবং ইতিবাচক মন্তব্য তাকে আরও উৎসাহিত করেছে। এছাড়া, ব্রেট লি, শন টেইট, জেসন গিলেস্পি, এবং ওয়াহাব রিয়াজের মতো কিংবদন্তি ফাস্ট বোলারদের পরামর্শও তাকে সমৃদ্ধ করেছে।

সনি বেকারের লক্ষ্য এখন সুস্পষ্ট। তিনি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো পারফর্ম করতে চান এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের জায়গা পাকা করতে চান।

এরপর তার স্বপ্ন ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলা। সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ড দলের নির্বাচকদের তরুণ প্রতিভার প্রতি আগ্রহ থেকে ধারণা করা যায়, খুব শীঘ্রই হয়তো জাতীয় দলের জার্সিতেও দেখা যেতে পারে তাকে।

সনির সাফল্যের এই গল্প, বাংলাদেশি তরুণ ক্রিকেটারদের জন্যেও অনুপ্রেরণা যোগাতে পারে, যারা স্বপ্ন দেখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের জায়গা করে নেওয়ার।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *