আতঙ্কে আমেরিকা! ২০০৯ সালের পর বেকারত্ব নিয়ে এত ভয়!

যুক্তরাষ্ট্রে (USA) অর্থনৈতিক উদ্বেগ বাড়ছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির নাগরিকদের মধ্যে একদিকে যেমন মূল্যস্ফীতি নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে বেকারত্ব নিয়ে দুশ্চিন্তা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান-এর করা জরিপে দেখা গেছে, চলতি মাসে ভোক্তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক আস্থা ১২ শতাংশ কমেছে। এই পতনের কারণ হিসেবে মার্কিন বাণিজ্য নীতিকে দায়ী করছেন অনেকে। বিশেষ করে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া বাণিজ্য শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বাড়বে। ২০০৯ সালের পর এই হার সর্বোচ্চ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এমন উদ্বেগের মূল কারণ হলো সরকারের নেওয়া বিভিন্ন বাণিজ্য সিদ্ধান্ত, যা ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসেবে আরও বেশি শুল্ক বৃদ্ধি এবং গাড়ির আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করা। এই পদক্ষেপগুলো সরাসরি ভোক্তাদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছে।

জরিপে দেখা গেছে, আগামী এক বছরের জন্য মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা গত মাসের তুলনায় বেশি। এছাড়া, আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৪.১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা ১৯৯৩ সালের পর সর্বোচ্চ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। এর কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর অনেক দেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এর ব্যতিক্রম নয়। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর আমাদের অর্থনীতি অনেকখানি নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক মন্দা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তা রেমিট্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং আমাদের অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এছাড়া, বাণিজ্য ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়তে পারে, যা আমাদের রপ্তানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের নীতিনির্ধারকদের এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত এবং সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *