বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের বিয়ের আসর বসতে চলেছে ইতালির ভেনিসে। আগামী ২৪ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এই বিবাহ-অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট বসবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, ভেনিসের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই বিয়ে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কারো কাছে এটি আনন্দের খবর হলেও, কেউ কেউ একে শহরের জন্য এক বিরাট উপদ্রব হিসেবে দেখছেন।
জানা গেছে, ইতালীয় ফ্যাশন ডিজাইনার ডোমেনিকো ডলসের মাধ্যমেই নাকি এই বিয়ের পরিকল্পনা শুরু হয়। তিনিই নাকি জেফ বেজোস ও লরেন সানচেজকে ভেনিসের কথা বলেছিলেন।
বিয়ের জন্য এরই মধ্যে ভেনিসের বিলাসবহুল পাঁচটি হোটেল বুক করা হয়েছে এবং ওয়াটার ট্যাক্সি ও বেজোসের বিশাল ইয়্যাটের জন্য একটি ডকও রিজার্ভ করা হয়েছে।
ভেনিসের মেয়র লুইগি ব্রুগনারো এই বিয়েকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহর “লক্ষ লক্ষ ইউরোর” অর্থনৈতিক সুবিধা পাবে।
বাংলাদেশি মুদ্রায় যা হিসাব করলে কয়েক কোটি টাকার সমান। অন্যদিকে স্থানীয় অনেক বাসিন্দাই এই আয়োজনে খুশি নন।
তাঁদের মতে, অতিরিক্ত পর্যটনের কারণে এমনিতেই শহর নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই ধরনের বড় অনুষ্ঠান সেই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
স্থানীয় এক ট্যুর গাইড ফ্রান্সেসকা জানান, “বিয়েটা একটা বিরাট ঝামেলা ডেকে আনবে।” তাঁর মতে, বেশিরভাগ মানুষের একই ধারণা।
অতিরিক্ত পর্যটনের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই অতিষ্ঠ। জর্জ ক্লুনি ও তাঁর স্ত্রী আমাল ক্লুনির বিয়ে নিয়েও একই ধরনের সমস্যা হয়েছিল।
তবে ক্লুনি দম্পতি ছিলেন “অনেক বেশি ভালো মানুষ”, এমনটাই মনে করেন ফ্রান্সেসকা।
অনুষ্ঠানে হলিউড তারকা কিম কার্দাশিয়ান, অপরাহ উইনফ্রে, ইভা লঙ্গোরিয়া, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, অরল্যান্ডো ব্লুমসহ আরও অনেক সেলিব্রিটির আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আমন্ত্রিত হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
ভেনিসের সিটি কাউন্সিলরের প্রধান মরিস সেরন জানিয়েছেন, এই ধরনের অনুষ্ঠান ভেনিসের জন্য অর্থনৈতিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, ভেনেসিয়া ডটকম নামের একটি স্থানীয় সংগঠন জানিয়েছে, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জন্যই ভেনিস উন্মুক্ত।
তাদের আপত্তির মূল কারণ হলো, একজন “ধনী ব্যক্তির” জন্য শহরটিকে এভাবে সাজানো হচ্ছে।
পর্যটকদের সচেতন করার লক্ষ্যে কাজ করা ‘ভেনিস ইজন্ট ডিজনিল্যান্ড’ নামের একটি সংগঠনের সদস্যরাও বেজোসের বিয়ের বিষয়ে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তাদের মতে, বিয়ের মতো অনুষ্ঠানের ওপরও কর আরোপ করা উচিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান