আজকাল, মানুষের জীবনে পোষা প্রাণীর গুরুত্ব বাড়ছে। কুকুর, বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে অনেকেই তাদের জন্য নানা ধরণের জিনিস কেনেন।
পোশাক থেকে শুরু করে বিশেষ খাবার, খেলনা – পোষ্যের জীবনযাত্রাকে আরও উন্নত করতে মানুষ এখন অনেক কিছুই করছেন।
তবে, এই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কি সবসময় সঠিক পথে হচ্ছে? পোষ্যদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ধারণা এবং এর ভালো-মন্দ দিকগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা।
যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা বলছে, মানুষজন পোষা প্রাণীদের জন্য সন্তান বা ডেটিংয়ের চেয়েও বেশি খরচ করে থাকে।
অনেকে তাদের পোষ্যকে পরিবারের সদস্যের মতোই দেখেন। তাদের ভালো রাখতে গিয়ে তারা বিভিন্ন ধরণের জিনিস কেনেন। বাজারে এখন পোষা প্রাণীদের জন্য উপলব্ধ জিনিসের অভাব নেই।
ফ্যাশনেবল পোশাক থেকে শুরু করে বিশেষ স্বাস্থ্যকর খাবার, সবই পাওয়া যায়।
পোষা প্রাণীদের পোশাকের বিষয়টি বেশ আলোচিত। কিছু মানুষ মনে করেন, পোষ্যকে সুন্দর দেখানোর জন্য পোশাক পরাতে পারেন।
তবে, পশুচিকিৎসক এবং আচরণবিদরা বলছেন, পোশাক পরালে অনেক সময় তাদের স্বাভাবিক চলাফেরায় অসুবিধা হতে পারে। বিশেষ করে বিড়ালদের ক্ষেত্রে এটা বেশি দেখা যায়।
তারা পোশাক পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না এবং এতে তাদের অস্বস্তি হয়।
আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে কিছু পোশাক অবশ্য প্রয়োজনীয়। শীতকালে বয়স্ক, দুর্বল বা ছোট জাতের কুকুরদের জন্য হালকা গরম পোশাক উপকারী হতে পারে।
তবে, পোশাকের ব্যবহার যেন তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পোষ্যদের জন্য বাজারে উপলব্ধ অন্যান্য জিনিসের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জাম, যেমন—বিশেষ কলার, ব্যাকপ্যাক এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এগুলো উপকারী হতে পারে, যেমন—উদ্বিগ্ন কুকুরদের শান্ত করতে কিছু বিশেষ জ্যাকেট সাহায্য করে।
তবে, এগুলো প্রশিক্ষণের বিকল্প হতে পারে না।
বিড়ালদের বাইরে ঘোরানোর জন্য ব্যাকপ্যাক বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে, পশু আচরণবিদদের মতে, এই ধরনের ব্যাকপ্যাকে বিড়ালদের অস্বস্তি হতে পারে, কারণ সেখানে তাদের নিরাপত্তা বোধ নাও হতে পারে।
পোষা প্রাণীদের স্বাস্থ্যবিধির জন্য শ্যাম্পু এবং অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবহারও বাড়ছে।
এক্ষেত্রে, পশুচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, পোষ্যের ত্বকের জন্য উপযুক্ত এবং মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।
খাবারের ক্ষেত্রে, পোষ্যদের সুষম খাবার সরবরাহ করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন ধরণের খাবার এবং সাপ্লিমেন্টগুলোর মধ্যে পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
অনেক সময় অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট তাদের জন্য প্রয়োজনীয় নাও হতে পারে।
খেলনার ক্ষেত্রে, পোষ্যদের আগ্রহ এবং তাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তিগুলোকে উৎসাহিত করে এমন খেলনা নির্বাচন করা উচিত।
উদাহরণস্বরূপ, বিড়ালদের শিকারের অনুভূতি জাগাতে লাঠি দিয়ে তৈরি খেলনা বেশ কার্যকর।
সবশেষে, পোষ্যদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো তাদের জন্য সময় বের করা, তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় যত্ন নেওয়া।
তাদের জন্য ভালো খাবার এবং খেলনা কেনার চেয়ে অনেক বেশি জরুরি হলো তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান