মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গবেষণা প্রকল্পের ওপর অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে একটি ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ চলছিল। এই ঘটনার জেরে বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ (NIH) নামের একটি সংস্থা এই গবেষণাটির জন্য অর্থ বরাদ্দ করত। তাদের এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন নিয়ে মানুষের দ্বিধা দূর করতে বা টিকার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করে, এমন কোনো গবেষণাকে তারা এখন আর গুরুত্ব দিতে চাইছে না।
ঘটনার শিকার হয়েছেন ডা. নিশা আচার্য। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান ফ্রান্সিসকো শাখায় কর্মরত একজন চিকিৎসক ও গবেষক।
তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘শিনগলস’ বা জলবসন্তের টিকা (Shingrix) কতটা নিরাপদ, বিশেষ করে চোখের স্নায়ুরোগের ক্ষেত্রে এর প্রভাব কেমন, তা নিয়ে তিনি কাজ করছিলেন। জানা যায়, এই টিকা নেওয়ার পর কারও কারও চোখের স্নায়ুতে আবার ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ডা. আচার্যের গবেষণা মূলত সেই দিকটির ওপর আলোকপাত করতে চেয়েছিল।
ডা. আচার্যের গবেষণা অনুযায়ী, এই ভ্যাকসিন নেওয়ার ফলে চোখের স্নায়ুতে প্রদাহ হতে পারে, যা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। তাঁর মতে, এই গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য টিকার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারত।
কিন্তু তাঁর গবেষণা প্রকল্পটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁর অধীনে কাজ করা তিনজন কর্মীকেও চাকরি ছাড়তে হবে।
এই গবেষণাটির জন্য প্রায় দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বরাদ্দ ছিল, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় বিশাল একটি অংক।
এই ঘটনার পর, ডা. আচার্য তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছেন। তাঁর মতে, এই ধরনের গবেষণা বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
কারণ, ভ্যাকসিনগুলি বাজারে ছাড়ার আগে তাদের নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়, কিন্তু সাধারণ মানুষের শরীরে প্রয়োগের পর কিছু বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই, টিকার নিরাপত্তা নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা বন্ধ করে দেওয়া হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিশেষ করে, যখন একটি ভ্যাকসিন বাজারে আসে, তখন তার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে জানার জন্য আরও গবেষণা দরকার। এই ঘটনাটি উন্নত বিশ্বে বিজ্ঞান গবেষণায় অর্থায়নের গুরুত্বের বিষয়টি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।
আমাদের দেশেও এ ধরনের গবেষণা এবং বিজ্ঞানচর্চাকে উৎসাহিত করা উচিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন