যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি তার সৎ ছেলেকে কুড়ি বছর ধরে বন্দী করে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ৫৬ বছর বয়সী কিম্বার্লি সুলিভান নামের ওই নারী বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন, তবে আদালতের নির্দেশে তাকে ইলেকট্রনিক জিপিএস ডিভাইস পরতে হচ্ছে।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, ওয়াটারবেরি শহরের বাসিন্দা কিম্বার্লি সুলিভানের বিরুদ্ধে তার সৎ ছেলেকে অপহরণ, মারধর এবং নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া ৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বন্দী জীবন যাপন করছিলেন এবং সম্প্রতি মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি জানান, প্রায় দুই দশক ধরে তিনি বন্দী ছিলেন।
আদালতে শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলি ডন থেরকিল্ডসেন জানান, নির্যাতিত ব্যক্তি এখনো ভয়ে আছেন এবং আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভুক্তভোগীর প্রথম প্রশ্ন ছিল, “যেখানে আমি ২০ বছর ধরে একটি ঘরে বন্দী ছিলাম, সেখানে তিনি (কিম্বার্লি) কীভাবে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন?”
বিচারক জোসেফ শোয়ার্টজ যদিও কিম্বার্লিকে গৃহবন্দী করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন, তবে তার জামিনের শর্ত হিসেবে জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারক তার এই সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, কিম্বার্লির স্থায়ী কোনো ঠিকানা নেই, তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং তার কোনো পূর্বের অপরাধের রেকর্ড নেই।
আদালতে কিম্বার্লির আইনজীবী ইয়োনিস কালোইডিস তার মক্কেলের জামিনের শর্ত শিথিল করার আবেদন জানান। তিনি বলেন, কিম্বার্লি এর আগে আদালতের সব নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অনলাইনে কিম্বার্লিকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তাই তার চলাফেরার ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বাড়বে।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে আরও কয়েকজন সাক্ষী তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কিম্বার্লির এক বন্ধু জানিয়েছেন, তিনি ২১ বছর ধরে কিম্বার্লিকে চেনেন, কিন্তু এই সময়ে কিম্বার্লি কখনো তার সৎ ছেলের কথা বলেননি এবং এমনকি তাকে নিজের বাড়িতেও আসতে দেননি।
আদালতে কিম্বার্লি সুলিভান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বর্তমানে তিনি ৩ লক্ষ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন