ব্রিটিশ রাগবি লিগের কিংবদন্তি ডগ লাফটন আর নেই। গত ১৬ই মার্চ, ২০২৩ তারিখে ৮০ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। খেলা এবং প্রশিক্ষক – উভয় ক্ষেত্রেই উজ্জ্বল ছিলেন তিনি।
ডগ লাফটন শুধু একজন খেলোয়াড় হিসেবেই পরিচিত ছিলেন না, বরং খেলোয়াড় তৈরির কারিগর হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল আকাশচুম্বী।
১৯৭০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজে গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে খেলা দলটির সদস্য ছিলেন তিনি। খেলোয়াড় হিসেবে চ্যালেঞ্জ কাপ জিতেছেন দুবার। তবে মাঠের বাইরে কোচ হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিতি লাভ করেন।
বিশেষ করে তার খেলোয়াড় বাছাই করার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল। তিনি এমন অনেক খেলোয়াড় খুঁজে বের করতেন যাদের হয়তো সেভাবে কেউ নজরে আনেনি। পরবর্তীতে তারাই রাগবি জগতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
নিজের শহর উইডনেসের হয়ে কোচিং করানোর সময় তিনি প্রতিটি ট্রফি জিতেছিলেন। তার অধীনে, উইডনেস রাগবি দল ‘কাপের রাজা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৮৯ সালের অক্টোবরে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ডগ লাফটনের প্রশিক্ষণে উইডনেস বিশ্ব ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে, যা ছিল তার কোচিং জীবনের অন্যতম সেরা সাফল্য।
সেই ম্যাচে তারা ক্যানবেরা রাইডার্সকে পরাজিত করে।
ডগ লাফটনের খেলোয়াড় বাছাই করার ক্ষমতা ছিল ঈর্ষণীয়। তিনি মাঠের বাইরের প্রতিভা খুঁজে বের করতে পারতেন।
মার্টিন অফিয়াহকে তিনি প্রথম খুঁজে পান একটি রাগবি সেভেন টুর্নামেন্টে। এরপর তাকে সাধারণের মাঝে থেকে তুলে এনে রাগবি লিগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্কোরার হিসেবে তৈরি করেন।
জোনাথন ডেভিস, যিনি একসময় ওয়েলসের হয়ে খেলতেন, তাকেও তিনি উইডনেসে নিয়ে আসেন। ডেভিসের মত তারকা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি উইডনেসের পুরনো খেলোয়াড় – টনি মাইলার, কার্ট সোরেনসেন এবং হুলমে ভাইদের নিয়ে দলটি প্রায় দুই দশক ধরে রাগবি জগতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছিল।
ডগ লাফটনের জন্ম ১৯৪৪ সালের ১৩ই মে, উইডনেসে। সেন্ট হেলেন্সে খেলার মাধ্যমে তার খেলোয়াড়ি জীবনের শুরু। এরপর তিনি উইগান এবং গ্রেট ব্রিটেনের হয়েও খেলেছেন।
১৯৭০ সালে গ্রেট ব্রিটেন দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ জেতেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে তিনি পুরোদমে কোচিং শুরু করেন।
১৯৭৮ সালে উইডনেসকে লিগ চ্যাম্পিয়ন করেন তিনি। ১৯৭৯ সালে তিনি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন। পরবর্তীতে তিনি গ্রেট ব্রিটেনের হয়েও অধিনায়কত্ব করেন।
খেলোয়াড়ি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি কোচিংয়ে মনোযোগ দেন এবং সাফল্যের শিখরে আরোহণ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি খেলা থেকে অবসর নিয়ে তার নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেন।
ডগ লাফটন খেলোয়াড় হিসেবে যেমন সফল ছিলেন, তেমনি কোচ হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল আকাশচুম্বী। রাগবি জগতে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian