ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার পিটার লিভার ৮৪ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি ১৭ বছর ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে এবং ১৭টি টেস্ট ম্যাচে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
মাঠের ক্রিকেটে নিবেদিতপ্রাণ, বিনয়ী এবং খেলাটির প্রতি উৎসর্গীকৃত একজন খেলোয়াড় হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন।
১৯৭০-৭১ মৌসুমে রে ইলিংworthের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে অ্যাশেজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন লিভার। এরপর ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমেও তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন।
তবে তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের একটি দুঃখজনক ঘটনাও ছিল। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান ইওয়েন চ্যাটফিল্ডকে একটি শর্ট বল করার পরে তিনি গুরুতর আহত হন। বলটি চ্যাটফিল্ডের মাথায় লাগে এবং তিনি সঙ্গে সঙ্গেই মাঠিতে লুটিয়ে পড়েন।
এই ঘটনার পর লিভার এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে তিনি খেলা ছাড়ার কথা ভেবেছিলেন। তবে সৌভাগ্যবশত, চ্যাটফিল্ড দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং লিভারকে ক্ষমা করে দেন।
লিভারের খেলোয়াড়ি জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি ছিল, যখন তিনি ১৯৭০ সালে একটি বিশেষ ম্যাচে বিশ্ব একাদশের বিরুদ্ধে খেলেন। সেই ম্যাচে তিনি সাতটি উইকেট নিয়েছিলেন।
তাঁর শিকারের তালিকায় ছিলেন এডি বার্লো, গ্রাহাম পোলক, গ্যারি সোবার্স, ক্লাইভ লয়েড, মাইক প্রোক্টর এবং ইনতিকাব আলম-এর মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা।
ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের টডমর্ডেনে জন্ম নেওয়া লিভার ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে খেলার মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে খেলতে শুরু করেন এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন।
১৯৬৮ সালে জ্যাক বন্ডের নেতৃত্বে ল্যাঙ্কাশায়ার দল শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং এক দিনের ক্রিকেটে দারুণ সাফল্য পায়। এই সময়ে দলটি টানা তিনবার গিললেট কাপ এবং সানডে লিগও জেতে।
খেলোয়াড় জীবন শেষে লিভার কোচিং পেশায় যোগ দেন। তিনি ল্যাঙ্কাশায়ারে তরুণ ক্রিকেটার মাইক আথারটনের সঙ্গে কাজ করেছেন। পরে তিনি ইংল্যান্ড দলের বোলিং কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর কোচিংয়ে অনেক তরুণ খেলোয়াড় উপকৃত হয়েছেন।
ক্রিকেট মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার পর, লিভার ডেভনে বসবাস করতে শুরু করেন এবং সেখানকার স্থানীয় ক্লাবের হয়েও খেলেছেন।
পিটার লিভার ছিলেন একজন অসাধারণ ক্রিকেটার এবং সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ। তাঁর প্রয়াণে ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান