বিশ্ব শান্তির নামে গ্রিনল্যান্ড দখলের ফন্দি! ট্রাম্পের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য!

ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে আনার আগ্রহ প্রকাশ করে আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তিনি বিশ্ব শান্তির জন্য এই পদক্ষেপ জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভেন্স গ্রিনল্যান্ডে একটি সংক্ষিপ্ত সফর করেন, যা ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ডের জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

আর্কটিক অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্বের কারণে গ্রিনল্যান্ডের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রহ বাড়ছে। এটি একটি বিশাল বরফাচ্ছাদিত দ্বীপ, যা ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল।

এখানকার খনিজ সম্পদ এবং সামরিক গুরুত্বের কারণে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই এর উপর নজর রাখছে। ট্রাম্প এর আগেও গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব করেছিলেন, যা ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ডের জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

জেডি ভেন্সের গ্রিনল্যান্ড সফর ছিল মূলত একটি সামরিক ঘাঁটিতে সংক্ষিপ্ত পরিদর্শন। এই সফরে তিনি মার্কিন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন।

তবে, ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ায় অনেকে এর সমালোচনা করেছেন। গ্রিনল্যান্ডের স্থানীয় বাসিন্দারাও যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রহকে ভালোভাবে নেয়নি। তাদের মতে, গ্রিনল্যান্ড কোনো বিক্রয়যোগ্য পণ্য নয়।

এই ঘটনার মধ্যে, গ্রিনল্যান্ডের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাঁচটি দলের মধ্যে চারটি একটি নতুন জোট সরকার গঠনের জন্য একত্রিত হয়েছে।

এই জোট ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড সম্পর্কিত আগ্রহের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের নেতারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, তারা ডেনমার্কের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অটুট রাখতে চায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের কোনো পদক্ষেপে রাজি নয়।

আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষাপটে গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত গুরুত্ব আরও বাড়ছে। এই অঞ্চলের জলপথ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য দেশগুলো একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে।

গ্রিনল্যান্ড উত্তর আটলান্টিক এবং উত্তর আমেরিকার প্রবেশদ্বার হিসেবেও পরিচিত, যা এটিকে সামরিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের আকাঙ্ক্ষা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ এখন একদিকে যেমন ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের জনগণের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল, তেমনই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলোর আগ্রহের উপর।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *