মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নিয়ে নতুন ফতোয়া! আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের কনস্যুলেট অফিসগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে তারা শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনকারীদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে। এর অংশ হিসেবে, এখন থেকে ভিসা প্রার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইলগুলোও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করা হবে।

এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, সন্ত্রাসবাদে সমর্থনকারী সন্দেহে কাউকে চিহ্নিত করা এবং ভিসা প্রত্যাখ্যান করা।

গত ২৫শে মার্চে পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় (কেবল) এই নতুন নির্দেশনার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’-এর প্রতি সমর্থন বিষয়ক একটি বিস্তৃত সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যার ভিত্তিতে ভিসা বাতিল করা হতে পারে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো আবেদনকারী যদি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পক্ষে ওকালতি করে অথবা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন বা কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জানায়, তাহলে তার ভিসা প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।

বিশেষ করে, নতুন ও নবায়নযোগ্য ‘এফ’, ‘এম’ এবং ‘জে’ ক্যাটাগরির স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কনস্যুলার কর্মকর্তাদের জন্য আবেদনকারীদের অনলাইন কার্যক্রম খুঁটিয়ে দেখার সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের মতে, জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী কোনো কার্যক্রমের প্রমাণ পাওয়া গেলে ভিসা বাতিল করা হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াকরণকারী বিভাগ ‘সন্দেহজনক’ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কন্টেন্টের স্ক্রিনশট নেবে এবং তা সংরক্ষণ করবে। এমনকি, পোস্টগুলো যদি পরে পরিবর্তন বা মুছেও ফেলা হয়, তবুও তা আবেদনকারীর নথিতে যুক্ত করা হবে।

পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কোনো আবেদনকারী যদি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পক্ষে সমর্থন জানায় বা এর পক্ষে জনসমর্থন তৈরি করে, তাহলে তার ভিসা পাওয়ার অযোগ্যতা প্রমাণ হতে পারে।

এছাড়া, মার্কিন নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকারি প্রতিষ্ঠান বা নীতিগুলোর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দেখালেও ভিসা বাতিল হতে পারে।

এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া গত ৭ই অক্টোবর ২০২৩ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা এবং ভিসার মেয়াদ বাড়াতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য, ওই দিন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যার ফলশ্রুতিতে ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে।

এতে ৫০,০০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সম্প্রতি, সরকার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে, যাদের বিরুদ্ধে হামাসকে সমর্থন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

নতুন এই পদ্ধতির কারণে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনসূচক, মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির সমালোচনা অথবা কোনো প্রতিবাদে অংশগ্রহণের মতো বিষয়গুলোও এখন ভিসা পর্যালোচনার কারণ হতে পারে।

এই নতুন নির্দেশনার ফলে, যেসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে যেতে ইচ্ছুক, তাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

কারণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের কোনো মন্তব্য, পোস্ট বা কার্যক্রম ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

তবে, এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের খবর পাওয়া যায়নি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *