যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় একটি ‘ব্ল্যাক মাস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চাওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ এবং সবশেষে কয়েকজনের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
কানসাস সিটির ‘সাতানিক গ্রোটো’ নামক একটি দলের প্রধান, মাইকেল স্টুয়ার্ট, শুক্রবার রাজ্যের আইনসভার ভেতরে এই বিতর্কিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি শুরু করতে চেয়েছিলেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা জড়ো হন এবং এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩০ জন সদস্যের একটি দল নিয়ে স্টুয়ার্ট ‘চার্চ ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ’-এর দাবিতে আইনসভার বাইরে জড়ো হন। তাদের অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকার খ্রিস্টানদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে থাকে এবং আইনসভার ভেতরে তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে গভর্নর লরা কেলি এক দিনের জন্য আইনসভার অভ্যন্তরে সব ধরনের বিক্ষোভ প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
সাতানিক গ্রোটোর এই কর্মসূচির খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানে কয়েকশ’ খ্রিস্টান পাল্টা বিক্ষোভকারী এসে জড়ো হয়। তারা শয়তানের প্রতীকী চিত্রের বিরোধিতা করে এবং যিশু খ্রিস্টের প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধার কথা জানায়। উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়, এবং খ্রিস্টানরা তাদের ধর্মীয় গান পরিবেশন করেন।
রাজ্যের ক্যাথলিক বিশপরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে একে ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এর আগে, রাজ্য আইনসভার উভয় কক্ষও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করে।
ঘটনার সময়, স্টুয়ার্ট যখন অনুষ্ঠানটি শুরু করতে উদ্যত হন, তখন উপস্থিত এক ব্যক্তি তার হাত থেকে স্ক্রিপ্ট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে স্টুয়ার্ট ওই ব্যক্তির ওপর চড়াও হন। এরপর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা স্টুয়ার্টকে আটক করে এবং শয়তানের নামে শ্লোগান দিতে দিতে তাকে সেখান থেকে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের পর স্টুয়ার্টের স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামী যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে প্রদত্ত বাকস্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করছিলেন। স্টুয়ার্টকে পরে সামান্য কিছু সময়ের জন্য আটক রাখা হয় এবং এক হাজার ডলার বন্ডের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়।
এছাড়াও, স্টুয়ার্টের সঙ্গে থাকা আরও দুজনকে, জসিলিন ফ্রেজি এবং শন অ্যান্ডারসনকে, বেআইনি সমাবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্ষোভের সময় স্ক্রিপ্ট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকারী ২১ বছর বয়সী মার্কাস শ্রোডারকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এই ঘটনার জেরে ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং রাষ্ট্র ও ধর্মের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন