যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ভয়েস অফ আমেরিকার (ভিওএ) কর্মীদের বরখাস্ত করার পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। শুক্রবারের এক রায়ে বিচারক জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ভিওএ বন্ধ করার জন্য একতরফাভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না।
এর ফলে, এই আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রায় ১,৩০০ সাংবাদিক ও অন্যান্য কর্মীর চাকরি আপাতত বহাল থাকছে।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত ভিওএ-র কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আদালতে মামলা করেছিলেন, যেখানে তাদের বাকস্বাধীনতা খর্ব হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভিওএ-র কর্মীরা মনে করেন, তাদের চাকরিচ্যুত করার চেষ্টা করে ট্রাম্প প্রশাসন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে চেয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি প্রচারণার মোকাবিলায় ভিওএ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে ৪০টির বেশি ভাষায় সংবাদ পরিবেশন করে এটি।
এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো, যেসব দেশে মুক্ত গণমাধ্যম নেই, সেখানকার মানুষের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ পৌঁছে দেওয়া। এই কারণে, ভিওএ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ভিওএ এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেডিও প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
বিচারক জে. পল ওয়েকেন তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন, কর্মীদের বরখাস্ত করার আগে আদালতকে আরও বিস্তারিতভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ, এই ধরনের পদক্ষেপ ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া (ইউএসএজিএম), যারা ভিওএ, রেডিও ফ্রি ইউরোপসহ সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত অন্যান্য মিডিয়া দেখাশোনা করে, তারা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তবে, আদালত সূত্রে জানা যায়, ইউএসএজিএম ৬২৩ জন ভিওএ কর্মীকে বরখাস্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
ভিওএ কর্মীদের এই মামলাটি ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত মিডিয়া প্রোগ্রাম বন্ধ করার চেষ্টার বিরুদ্ধে দায়ের করা চারটি মামলার মধ্যে অন্যতম। রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং ওপেন টেকনোলজি ফান্ডও পৃথকভাবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
আদালতের এই রায়ের ফলে, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচিত হয়েছে।
এটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বর্তমানে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।