ব্রিটিশ ঘোড়দৌড়ে জীনগত ডোপিং প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিশাল বিনিয়োগ
খেলাধুলায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা বজায় রাখতে যুক্তরাজ্যের ঘোড়দৌড় কর্তৃপক্ষ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতায় জীনগত ডোপিং প্রতিরোধের জন্য প্রায় ২ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় এর সমতুল্য) বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল, ঘোড়দৌড়ের শুদ্ধতা রক্ষা করা এবং খেলাটিকে সবার জন্য আরও বেশি ন্যায্য করে তোলা।
জীনগত ডোপিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে অ্যাথলিটদের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তাদের জিনগত কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হয়।
যদিও বর্তমানে ঘোড়দৌড়ে জীনগত ডোপিং ব্যবহারের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবুও এর সম্ভাবনাকে কর্তৃপক্ষ একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।
ব্রিটিশ হর্স রেসিং অথরিটির প্রধান নির্বাহী ব্রান্ট ডানশেয়া জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রযুক্তি এখন সহজলভ্য এবং অনলাইনেও এর উপাদান কেনা সম্ভব।
নতুন এই পরীক্ষার মাধ্যমে ঘোড়ার শরীরে ‘ট্রান্সজিন’ শনাক্ত করা হবে।
ট্রান্সজিন হলো এক ধরনের বাহক যা বাইরে থেকে জিনগত উপাদান বহন করে শরীরে প্রবেশ করায়।
এই ডোপিংয়ের ফলে ঘোড়ার মাংসপেশি বৃদ্ধি বা লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব, যা তাদের দৌড়ের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হান্ট এবং ফ্ল্যাট রেসের ঘোড়াগুলোকে নিয়মিত পরীক্ষা করা হবে।
শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এর প্রভাব বিস্তারের জন্য অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান ও হংকংয়ের মতো দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বজুড়ে ফ্ল্যাট রেসিংয়ে এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
অতীতেও, খেলাধুলায় ডোপিং কেলেঙ্কারির কারণে এর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০১৩ সালের একটি ঘটনা এবং ২০২০ সালের একটি আলোচিত মামলার কথা উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ বলছে, খেলাধুলায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং যে কোনো ধরনের প্রতারণা রুখতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, ব্রিটিশ হর্স রেসিং কর্তৃপক্ষ খেলার প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এই বিনিয়োগ শুধু একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা নয়, বরং খেলাধুলাকে আরও উন্নত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান