বরফের অভাব সত্ত্বেও অলিম্পিকের স্বপ্নে বিভোর ব্রিটেনের কঙ্কাল দৌড়বিদরা।
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ব্রিটেনের নাম উজ্জ্বল করেছেন দুই কঙ্কাল দৌড়বিদ—ম্যাট ওয়েস্টন ও মার্কাস ওয়ায়েট। তাঁদের সাফল্যের কাহিনি সত্যিই অসাধারণ, কারণ শীতকালীন এই খেলার জন্য প্রয়োজনীয় বরফের ট্র্যাক (ice track) তাঁদের দেশে নেই।
বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ঘাস-জমির মাঝে তাঁরা তৈরি করেছেন নিজেদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যেখানে তাঁরা প্রতিকূলতাকে জয় করে সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে আরোহণ করেছেন।
ওয়েস্টন ও ওয়ায়েট, দুজনেই সম্প্রতি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ ফল করেছেন। ওয়েস্টন তাঁর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব ধরে রেখেছেন, আর ওয়ায়েট রৌপ্য পদক জিতেছেন।
এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁদের কঠোর পরিশ্রম আর ডেডিকেশন। সাধারণত শীতকালীন খেলাধুলার দেশগুলোতে বরফের ট্র্যাক থাকে, যেখানে খেলোয়াড়রা নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতে পারে।
কিন্তু ব্রিটেনের আবহাওয়া সেভাবে সহায়ক না হওয়ায়, এই দুই ক্রীড়াবিদ গ্রীষ্মকালে ঘাস-জমিতে এবং শীতকালে বিভিন্ন দেশে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন।
এই দুই দৌড়বিদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতিও বেশ অভিনব। বরফের অভাবের কারণে তাঁরা মূলত পুশ-স্টার্টের (push-start) ওপর বেশি মনোযোগ দেন।
তাঁদের মূল শক্তি হল— তাঁরা দ্রুত নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারেন। বেজিং ২০২২ অলিম্পিকে (Beijing 2022 Olympics) অবশ্য তাঁরা ভালো ফল করতে পারেননি, কারণ নতুন সরঞ্জাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হয়েছিল।
তবে তাঁরা হাল ছাড়েননি। এরপর তাঁরা তাঁদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনেন এবং নতুন কোচ ও সরঞ্জাম নির্মাতাদের (sled builder) সাহায্য নিয়েছেন।
এই মুহূর্তে তাঁদের প্রধান লক্ষ্য হল ২০২৬ সালের শীতকালীন অলিম্পিক (2026 Winter Olympics)। তাঁরা এখন পর্যন্ত যে পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট যে তাঁরা পদকের অন্যতম দাবিদার।
ওয়েস্টন ও ওয়ায়েটের সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁদের মধ্যেকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং দলের প্রতি গভীর ভালোবাসা। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে প্রশিক্ষণ করেন এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
যদিও তাঁরা একে অপরের প্রতিযোগী, তবুও তাঁদের এই সহযোগিতামূলক মনোভাব সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
ওয়েস্টন এবং ওয়ায়েট দুজনেই তাঁদের সাফল্যের জন্য ব্রিটেনের আবহাওয়া এবং সুযোগ-সুবিধা অভাবকে একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তাঁদের মতে, এই প্রতিকূলতা তাঁদের আরও শক্তিশালী করেছে এবং তাঁরা যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখেছেন।
এই দুই ক্রীড়াবিদের গল্প শুধু খেলাধুলার জগৎকে নয়, বরং সকলকেই অনুপ্রেরণা যোগায়। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কীভাবে লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হয়, তাঁরা যেন তারই উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান