উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচন: রেকর্ড ভাঙা ব্যয়ে বিতর্কের ঝড়
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই নির্বাচন সেখানকার বিচার বিভাগের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, কারণ এর মাধ্যমে রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে, তা নির্ধারিত হবে।
আর তাই, উভয় দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন প্রযুক্তি বিলিয়নেয়ার এলন মাস্ক। জানা গেছে, তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ব্র্যাড শিমেলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং তার জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করছেন।
মাস্কের ব্যক্তিগত অনুদান এবং তার সমর্থিত বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আসা অর্থের পরিমাণ ইতিমধ্যে ২ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে মাস্ক বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফারও দিচ্ছেন।
অন্যদিকে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই নির্বাচনে পিছিয়ে নেই। জর্জ সরোস ২ মিলিয়ন ডলার এবং প্রতিবেশী ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জেবি প্রিটজকার ১.৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন।
উভয় পক্ষই তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করছে এবং নির্বাচনের ফল নিজেদের দিকে টানতে চাইছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উইসকনসিনের এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য যেকোনো রাজ্যের তুলনায় ভিন্ন। কারণ, এখানে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত বিষয়গুলোও আলোচনায় আসছে।
নির্বাচনের প্রচারণায় নারী অধিকার, গর্ভপাতের স্বাধীনতা এবং অপরাধ দমন – এই বিষয়গুলো বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।
নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থী হলেন ডেমোক্রেট দলের সুসান ক্রফোর্ড এবং রিপাবলিকান দলের ব্র্যাড শিমেল। নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে, ক্রফোর্ডের সমর্থকরা গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন, যেখানে শিমেলের সমর্থকরা অপরাধ দমনের উপর জোর দিচ্ছেন।
উভয় পক্ষই তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনছেন এবং ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
তবে, এই নির্বাচনে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো অর্থ ও প্রভাবের খেলা। বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের কারণে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সমালোচকরা বলছেন, এর ফলে বিচারকদের নিরপেক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং জনগণের আস্থা কমতে পারে।
এমতাবস্থায়, উইসকনসিনের এই নির্বাচন শুধু একটি রাজ্যের বিচার বিভাগের ভাগ্যই নির্ধারণ করবে না, বরং তা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে অর্থের প্রভাব নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন