ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড, উদ্ধারকাজে সংকট
গত শুক্রবার ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়।
এতে মান্দালয়ে বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা উদ্ধারকাজকে কঠিন করে তুলেছে। একইসাথে, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়েছে, সেখানেও একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ধসে পড়েছে।
মান্দালয়ে উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন, তবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন, যাদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।
শহরের হাসপাতালগুলোতে আহতদের উপচে পড়া ভিড়, বিদ্যুতের অভাব এবং জ্বালানি সংকটের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মান্দালয়ের বাসিন্দা সান্দার উইন জানান, তার ছয় বছর বয়সী ছেলেকে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করা হয়েছে, তবে সে গুরুতর আহত। তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে নিতে হয়েছে।
অন্যদিকে, ব্যাংককে উদ্ধারকারীরা একটি ধসে পড়া ভবনে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। ভবনটি নির্মাণের সময় ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার ফলে বহু শ্রমিক ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন।
ব্যাংককের উদ্ধারকারী কর্মী আতিকম ওয়াতকোসন জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া শ্রমিকদের অবস্থান নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে জীবিতদের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা এখনো রয়েছে এবং ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে।
ভূমিকম্পের কারণে মান্দালয়ে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে, শুধু মান্দালয় শহরেই এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভূমিকম্পের পর থাইল্যান্ড সরকার দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। শহরের বিমানবন্দর ও গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু হয়েছে এবং দোকানপাট ও রেস্টুরেন্টগুলো ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে।
তবে, ব্যাংককের অনেক উঁচু ভবনে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেখানকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।
উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের পাশাপাশি, উভয় দেশেই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা