আলবেনিয়ার নতুন আর্চবিশপ হিসেবে অভিষিক্ত হলেন যোয়ান।
আলবেনিয়ার খ্রিস্টান অর্থোডক্স চার্চের প্রধান হিসেবে অভিষিক্ত হলেন যোয়ান। রাজধানী তিরানায় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই অভিষেক সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে দেশটির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় গুরু এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত জানুয়ারিতে আর্চবিশপ আনাস্তাসিওসের মৃত্যুর পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন যোয়ান।
আর্চবিশপ যোয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিরানা, দুরেস ও সমগ্র আলবেনিয়ার আর্চবিশপ এবং আলবেনিয়ার অটোগেফালাস অর্থোডক্স চার্চের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পবিত্র সিনডের সাত সদস্যের একটি দলের সর্বসম্মত ভোটে তিনি নির্বাচিত হন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে যোয়ান তাঁর পূর্বসূরীর মতই ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার অঙ্গীকার করেন। তিনি আরও বলেন, আলবেনিয়ার অর্থোডক্স চার্চ সকলের সাথে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
অনুষ্ঠানে আলবেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বাজরাম বেগাজ এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি বলেন, এই অভিষেক অনুষ্ঠান “ধর্মীয় সীমানা ছাড়িয়ে একটি ন্যায্য, আরও মানবিক, ঐক্যবদ্ধ এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজ গঠনের আহ্বান জানায়।”
আলবেনিয়ার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯২২ সালে দেশটির অর্থোডক্স চার্চকে স্ব-শাসিত ঘোষণা করা হয়েছিল। এর আগে এটি ওহরিদের আর্চবিশপ্রিক এবং কনস্টান্টিনোপলের প্যাট্রিয়ার্কেটের অধীন ছিল।
আর্চবিশপ যোয়ান, যিনি ফাতমির পেলুশি নামে পরিচিত, ১৯৬৯ সালে জন্মগ্রহন করেন। তিনি মুসলিম পরিবারে বেড়ে উঠলেও ১৯৭৯ সালে গোপনে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেন।
কমিউনিস্ট শাসনের সময় তাঁর পরিবারকে অনেক নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। পরে তিনি ইতালিতে যান এবং সেখান থেকে বোস্টনের হলি ক্রস গ্রিক অর্থোডক্স স্কুল অব থিওলজি থেকে পড়াশোনা করেন।
১৯৯২ সালে আলবেনিয়ার অনেক মানুষ যখন দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছিল, তখন যোয়ান আর্চবিশপ আনাস্তাসিওসকে চার্চের পুনর্গঠনে সহায়তা করার জন্য ফিরে আসার প্রস্তাব দেন।
বর্তমানে তিনি আলবেনিয়ার অর্থোডক্স চার্চের ষষ্ঠ প্রধান।
২০২৩ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, আলবেনিয়ার প্রায় ২৪ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ৭ শতাংশ অর্থোডক্স খ্রিস্টান। যদিও চার্চের দাবি, এই সংখ্যা আরও বেশি।
দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম, এরপর ক্যাথলিক, অর্থোডক্স এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও নিরীশ্বরবাদীরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস