শিরোনাম: ফিলিস্তিনি অধিকারের দাবিতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ, শিক্ষার্থীদের উপর দমননীতি
নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের দাবিতে হওয়া প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। সম্প্রতি, এই প্রতিবাদগুলির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে এবং তাদের ডিগ্রি বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৮ই মার্চ, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে, যিনি ফিলিস্তিনি অধিকার আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্টরা গ্রেপ্তার করে। জানা যায়, খলিলের ছাত্র ভিসা এবং গ্রিন কার্ড বাতিল করা হয়েছে, যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি।
খলিলকে প্রথমে নিউ জার্সিতে আটক রাখা হয় এবং পরে লুইজিয়ানায় স্থানান্তর করা হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, ‘দি এনক্যাম্পমেন্টস’ নামে একটি নতুন তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। এই তথ্যচিত্রে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের দমননীতির কারণে, ক্যাম্পাস যেন একটি পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
তথ্যচিত্রে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাতে একত্রিত হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় যেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিনিয়োগ বন্ধ করে।
১৯৬০-এর দশকে ভিয়েতনামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের সময় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের একটি ইতিহাস রয়েছে। সেই সময়ের ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বর্তমানের ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের তুলনা করে অনেকে বলছেন, শিক্ষার্থীরা সবসময় ইতিহাসের সঠিক পথে থেকেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদকারীদের দমনে পুলিশ ডাকলে, বিক্ষোভকারীদের উপর রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলাকারীদেরও বাধা দেয়নি পুলিশ।
এই পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যচিত্রের পরিচালক কেই প্রিটজকার বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ক্যাম্পাসকে কিভাবে এই ইস্যুতে পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করা হলো, তা সত্যিই খুব উদ্বেগজনক।”
বর্তমানে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়ের থেকেও বেশি, ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশ মেনে নিয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান