নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত: বাড়ছে বিভ্রান্তি?

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে দেশটির নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিবর্তনের লক্ষ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ বেশ উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই আদেশের কারণে আগামী ২০২৬ সালের ফেডারেল নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণের পদ্ধতি— সবকিছুতেই পরিবর্তনের ইঙ্গিত রয়েছে, যা নির্বাচন কর্মকর্তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

ট্রাম্পের এই আদেশে ভোটারদের নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দাখিল করা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে অনেক রাজ্যে বিদ্যমান ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন আসতে পারে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যাদের জন্মসনদ নেই বা পাসপোর্ট নেই, তাদের জন্য ভোট দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

এছাড়া, ভোট দেওয়ার সময়সীমা নিয়েও কিছু রাজ্যে কড়াকড়ি আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে। কারণ, এর জন্য নতুন করে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

এছাড়া, ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সহায়তা কমে যাওয়ায় কর্মকর্তাদের উদ্বেগে ফেলেছে।

আদেশের বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা যাচ্ছে। রিপাবলিকান দলের কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপের পক্ষে মত দিলেও ডেমোক্রেটরা এর বিরোধিতা করছেন।

তারা মনে করেন, এই ধরনের পরিবর্তন ভোটারদের মধ্যে অনাস্থা তৈরি করতে পারে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট রাজ্যের সেক্রেটারি অফ স্টেট স্টেফানি থমাস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, রাজ্যগুলো চাইলেই দ্রুত তাদের নির্বাচনী সরঞ্জাম পরিবর্তন করতে পারবে না।

এই পরিবর্তনের ফলে পুরনো সরঞ্জাম অচল হয়ে যেতে পারে, যা তাদের জন্য বিশাল আর্থিক ক্ষতির কারণ হবে।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছেন। তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হলেও, ভোটগ্রহণে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

তবে, এই বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই আদেশ বাস্তবায়িত হলে ভোটারদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি হতে পারে এবং নির্বাচনের ফল নিয়েও সন্দেহ দেখা দিতে পারে।

তারা বলছেন, নির্বাচনের নিয়মকানুন পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় ভোটাররা তাদের অধিকার সম্পর্কে অবগত হন না, যা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এই আদেশের কারণে বিভিন্ন রাজ্যে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং এর ফলে ২০২৬ সালের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *