আফগানিস্তানে তালেবানদের হাতে আটক এক মার্কিন নারীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশটির কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি।
একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশের পর এবং কাতারের সহায়তায় ওই নারীকে মুক্তি দেওয়া হয়। খবরটি নিশ্চিত করেছে সিএনএন।
মুক্তির পর ওই মার্কিন নারী, ফেই হল, বর্তমানে সুস্থ আছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিনা অনুমতিতে ড্রোন ব্যবহার করার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল।
কাতারের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত কাতার দূতাবাসের কর্মকর্তারা হলকে গ্রহণ করেন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তার সুস্থতা নিশ্চিত করেন। তাকে দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জালমাই খালিলজাদ শনিবার এক টুইট বার্তায় কাতারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে হলের একটি ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি লেখেন, “তালেবান কর্তৃক মুক্তি পাওয়া মার্কিন নাগরিক ফেই হল এখন কাবুলে আমাদের বন্ধু কাতারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং শীঘ্রই তিনি বাড়ি ফিরবেন। কাতারকে ধন্যবাদ, তাদের অবিরাম এবং অবিচল অংশীদারিত্বের জন্য।”
আগে, মার্কিন দূত অ্যাডাম বোয়েলার এবং জালমাই খালিলজাদ আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন, জর্জ গ্লেজম্যান নামের অন্য এক মার্কিন নাগরিককে মুক্ত করার জন্য। এক্ষেত্রেও কাতার মধ্যস্থতা করেছিল।
২০২২ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে কাতার, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করছে।
অন্যদিকে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তিনজন তালেবান কর্মকর্তার ওপর থেকে পুরষ্কারের ঘোষণা তুলে নেয়, তবে তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে বহাল রেখেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিরাজউদ্দিন হাক্কানি, আবদুল আজিজ হাক্কানি এবং ইয়াহিয়া হাক্কানির ওপর বর্তমানে কোনো পুরস্কারের ঘোষণা নেই।
তবে, তারা এখনো ‘বিশেষভাবে মনোনীত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী’ (Specially Designated Global Terrorists – SDGTs) হিসেবে চিহ্নিত। হাক্কানি নেটওয়ার্ক এখনো একটি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং এসডিজিটি হিসেবে চিহ্নিত।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মুখপাত্র আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিতভাবে ‘পুরস্কারের’ ঘোষণা পর্যালোচনা করে।
উল্লেখ্য, হাক্কানি নেটওয়ার্ক কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও আত্মঘাতী বোমা হামলার জন্য দায়ী।
বর্তমানে এই নেটওয়ার্কের সদস্যরা তালেবান সরকারের অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানুয়ারিতে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তালেবান নেতারা যদি আরও বেশি মার্কিন জিম্মিকে ধরে রাখে, তবে তাদের শীর্ষ নেতাদের ওপর ‘বড় অঙ্কের পুরষ্কার’ ঘোষণা করা হবে।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন