আফগানিস্তানে তালেবান কর্তৃক এক মার্কিন নারীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সাবেক মার্কিন দূত জালমাই খলিলজাদ শনিবার জানিয়েছেন, সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া এই মার্কিন নাগরিকের নাম ফে হ্যাল। তাকে কাতারের তত্ত্বাবধানে কাবুলে রাখা হয়েছে এবং দ্রুতই তিনি দেশে ফিরবেন।
ফে হ্যালের মুক্তির কয়েক দিন আগে, জর্জ গ্লেজম্যান নামের আরও এক মার্কিন নাগরিককে তালেবান মুক্তি দেয়। গ্লেজম্যানকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে আফগানিস্তানে আটকে রাখা হয়েছিল।
মুক্তি পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান এবং সেখানে তার স্ত্রী ও প্রাক্তন কারাসঙ্গীর সাথে মিলিত হন।
তালেবান গ্লেজম্যানের মুক্তিকে “শুভ ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহের প্রমাণ হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে তালেবান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইছে।
জানুয়ারী মাস থেকে এ পর্যন্ত তালেবান চারটি মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে। মূলত, তালেবান সরকার তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের চেষ্টা করছে এবং এটিকে স্বাভাবিকীকরণের একটি অংশ হিসেবে দেখছে।
যদিও ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর থেকে কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে বেশ কয়েকটি দেশ এখনো সেখানে তাদের কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় তালেবানের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন চেয়েছিল ১৪ মাসের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করতে।
তবে এই চুক্তিতে তৎকালীন পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের কোনো স্থান ছিল না। এর ফলস্বরূপ, ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এবং দেশটির নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যায়।
কাবুল বিমানবন্দরের বোমা হামলায় অন্তত ১৭০ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক এবং ১৩ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল।
বর্তমানে, ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসলে তালেবান সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেমন হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সুস্পষ্ট নীতি ঘোষণা করা হয়নি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা