যুক্তরাষ্ট্রে টেসলা শোরুমগুলোর সামনে সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছেন বহু মানুষ। তারা মূলত বিশ্বের শীর্ষ ধনী এলন মাস্কের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের ঘনিষ্ঠতা এবং সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তার যোগদানের কারণেই মূলত এই বিক্ষোভের সূত্রপাত। বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন, মাস্ক সরকারের ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারি ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছেন এবং এর মাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বিক্ষোভকারীরা টেসলার ডিলারশিপ ও গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ‘টেসলা টেকডাউন’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই প্রতিবাদগুলো সংগঠিত হচ্ছে।
এই সংগঠনের সঙ্গে আছেন টেসলার গাড়ির মালিক, অভিনেতা জন কাসাক, এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা জ্যাসমিন ক্রকেটসহ আরও অনেকে।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৭৭টি টেসলা শোরুম ও সার্ভিস সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানে একটি শোরুমের সামনে প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ মানুষ মাস্কের পদত্যাগ দাবি করে জড়ো হন।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘প্ল্যানেট ওভার প্রফিট’-এর সদস্যরাও এই বিক্ষোভে অংশ নেন। তাদের মতে, মাস্ককে প্রতিহত করা গেলে জীবন বাঁচানো এবং গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব।
৭০ বছর বয়সী মার্কিন মনোবিজ্ঞানী অ্যামি নেইফেল্ড ১৯৭০-এর দশকের ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের পর এই প্রথম কোনো বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এলন মাস্ক আমেরিকার রাজনীতিকে ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
লন্ডনেও প্রায় দুই ডজন বিক্ষোভকারী একটি টেসলা ডিলারশিপের সামনে মাস্কের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান। বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা একটি প্ল্যাকার্ডে মাস্কের ছবির পাশে হিটলারের ছবি ব্যবহার করা হয়।
বিক্ষোভের পাশাপাশি, কেউ কেউ টেসলার গাড়ি ভাঙচুর করেছেন এবং আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এই ধরনের ঘটনাকে ‘দেশীয় সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মাস্ক এক বিবৃতিতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং এর সঙ্গে জড়িতদের ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এদিকে, টেসলার কিছু পুরনো ক্রেতা তাদের গাড়ি বিক্রি করতে বা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন। মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের জোটের কারণে তারা এমনটা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও, মাস্ক কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের নতুন মডেল ‘ওয়াই’ আবারও এই বছর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গাড়ির তালিকায় শীর্ষে থাকবে।
এলন মাস্কের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে প্রায় ৩১ লাখ কোটি টাকার সমান (১ মার্কিন ডলার = ১১০ টাকা ধরে)।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা