মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ‘ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিস’-এর (USIP) বহু কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে ইমেলের মাধ্যমে কর্মীদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া এক সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ এই গণছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, মূলত ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার অভিযোগের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও অর্থায়িত একটি থিংক ট্যাংক হলো ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিস। সংঘাত প্রতিরোধ ও সমাধানে কাজ করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এক নির্বাহী আদেশে এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার কথা বলা হয়। এর পরেই মূলত এই গণছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। অনেকে মনে করছেন, ইলন মাস্কের একটি অনানুষ্ঠানিক বিভাগ ‘ডগ’ (Doge) এই সিদ্ধান্তের পেছনে কলকাঠি নেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কর্মীদের ব্যক্তিগত ইমেইলে ছাঁটাই সংক্রান্ত বার্তা পাঠানো হয়। কারণ, কর্মীদের অনেকেরই অফিসের সিস্টেমে প্রবেশাধিকার ছিল না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ৩০০ জন কর্মীর মধ্যে বেশ কয়েকজন মানবসম্পদ বিভাগের কর্মী এবং কিছু বিদেশি কর্মচারী, যাদের আগামী ৯ই এপ্রিলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে বলা হয়েছে, তাদের আপাতত বহাল রাখা হয়েছে।
সংস্থা সূত্রে খবর, আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্টদেরও আপাতত রাখা হয়েছে, যারা নিজ নিজ অঞ্চলের কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন এবং তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবেন।
এক প্রাক্তন কর্মকর্তার মতে, কর্মীদের এই ছাঁটাই ছিল ‘ডগ’-এর পূর্বপরিকল্পিত একটি অংশ।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি এক ইমেইলে জানান, ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিস ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ’ হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ‘অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো এবং করদাতাদের অর্থ বাঁচানোর’ উদ্দেশ্যে এই কাজ করছে। কর্মীদের পাঠানো বার্তায় বলা হয়, শুক্রবার থেকে তাদের চাকরি শেষ হয়েছে।
কর্মীদের ৭ই এপ্রিলের মধ্যে তাদের ডেস্ক খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংস্থাটির প্রাক্তন উপদেষ্টা মেরি গ্লান্টজ এই গভীর রাতে ছাঁটাইয়ের ঘটনায় অবাক হননি।
তিনি মনে করেন, রাশিয়া কীভাবে বিশ্বজুড়ে সংঘাত সৃষ্টি করেছে, তা নিয়ে গবেষণা এবং এর সমাধানে সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো নিয়ে কাজ করা জরুরি ছিল। তাঁর মতে, ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিস এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকে।
এদিকে, ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য আইনজীবীরা শনিবার বৈঠকে বসেন।
প্রাক্তন আইনজীবী জর্জ ফুটে জানান, কর্মীরা বর্তমানে কোনো মামলার অংশ নন। তাই তাঁদের আলাদাভাবে মামলা করতে হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান