ইউক্রেন যুদ্ধ: খারকিভে সামরিক হাসপাতালে হামলার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনল কিয়েভ
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে, যেখানে দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনছে। শনিবার, রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে একটি সামরিক হাসপাতালে আঘাত হানে।
এই হামলায় অন্তত দুইজন নিহত এবং ২৫ জনের বেশি আহত হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধের’ অভিযোগ এনেছে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নিয়ম লঙ্ঘনের কথা বলেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খারকিভে সামরিক হাসপাতালে হামলার পাশাপাশি শপিং সেন্টার এবং আবাসিক এলাকাতেও আঘাত হেনেছে ড্রোনগুলো। আহতদের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর অবস্থা গুরুতর।
খারকিভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ সিনেহুবভ জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে চিকিৎসা সেবারত সেনা সদস্যও রয়েছেন।
এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার ক্রমাগত ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন রাশিয়াকে শান্তি আলোচনার টেবিলে আনতে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এর আগে, রাশিয়ার ড্রোন হামলায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডিনিপ্রোতে চারজন এবং মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রিভি রিহে ৯ জন আহত হয়।
জেলেনস্কি বলেন, “আমরা একটি জোরালো প্রতিক্রিয়ার আশা করছি, বিশেষ করে আমেরিকা, ইউরোপ এবং কূটনীতির ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোর কাছ থেকে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার প্রতি রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে ‘অপর্যাপ্ত’ ছিল।
অন্যদিকে, রাশিয়াও পাল্টা অভিযোগ করেছে। তারা বলছে, ইউক্রেন রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেন বেলগোরোদের বিদ্যুৎ গ্রিডে কয়েকবার হামলা চালিয়েছে, যার ফলে প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
তবে, রয়টার্স এই খবরের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা যখন ব্যর্থ হচ্ছে, তখন উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নতুন করে লঙ্ঘনের অভিযোগ আনছে। ইউক্রেনীয় সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া আসন্ন সপ্তাহগুলোতে নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ইউক্রেনের উপর চাপ আরও বাড়াবে এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনার ক্ষেত্রে ক্রেমলিনের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।
ইউক্রেনীয় নেতারা বারবার বলছেন, রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধের জন্য অর্থপূর্ণ আলোচনা করার কোনো ইচ্ছা নেই।
যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনা করে, জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর কূটনীতিকরা কিয়েভে এই বিষয়ে একমত হয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, রাশিয়া আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করে আরও বেশি ভূমি দখলের চেষ্টা করছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান