দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানল, ঘটনার সূত্রপাত পিতামহের সমাধিস্থলে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় চলতি বছরের ভয়াবহতম দাবানলের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে দেশটির পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, এক ব্যক্তি অসাবধানতাবশত তার দাদা-দাদীর সমাধিস্থল পরিষ্কার করার সময় এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত করেন। ইতোমধ্যে আগুনে পুড়ে দেশটির বিস্তীর্ণ বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।
দেশটির উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশের ইউইসেং অঞ্চলে, যা দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানকার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গত ২২শে মার্চ তিনি তার দাদা-দাদীর সমাধিস্থলে আগাছা পরিষ্কার করার সময় অসাবধানতাবশত আগুন ধরিয়ে ফেলেন। ওই ব্যক্তির মেয়ে পুলিশকে জানিয়েছেন, তার বাবা সমাধির উপরের ঝুলে থাকা গাছের ডালপালা সিগারেটের লাইটার দিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন।
প্রদেশের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “আমরা তাকে আটক না করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রস্তুত করছি। তদন্ত শেষ হওয়ার পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” তদন্তে আরও এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দমকা হাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং দাবানলের সৃষ্টি হয়। কোরিয়ার আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার সময় ওই এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এমনকি এর আগে, ২০২৩ সাল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
এই ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন হেলিকপ্টার পাইলটও রয়েছেন, যিনি আগুন নেভানোর সময় দুর্ঘটনায় পতিত হন। দাবানলে ইউইসেং-এর গউনসা মন্দির কমপ্লেক্সের মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধারণা করা হয়, এই মন্দিরটি সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল।
এই অগ্নিকাণ্ড দক্ষিণ কোরিয়ার জনমিতিক সংকট এবং আঞ্চলিক বৈষম্যকেও সামনে এনেছে। দেশটির গ্রামীণ এলাকাগুলোতে জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে এবং বয়স্ক মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। দাবানলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।