তুরস্কে এক সুইডিশ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত ও দেশটির প্রেসিডেন্টের অপমান করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আটককৃত সাংবাদিকের নাম জোয়াকিম মেদিন, যিনি সুইডেনের দৈনিক পত্রিকা ড্যাজেন্স ইটিসি-তে কাজ করেন।
জানা গেছে, ইস্তাম্বুলের মেয়রকে কারাবন্দী করার প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে তুরস্কে গিয়েছিলেন মেদিন। বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে নামার পরেই তাঁকে আটক করা হয় এবং পরের দিনই কারাগারে পাঠানো হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মেদিনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়া’ এবং ‘প্রেসিডেন্টকে অপমান করার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মেদিন তুরস্ক বিরোধী খবর করার জন্য পরিচিত এবং নিষিদ্ধ কুর্দি জঙ্গি সংগঠন পিকেকের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই গ্রেপ্তারের সঙ্গে সাংবাদিকতার কোনো সম্পর্ক নেই।
মেদিনকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা আগে, বিক্ষোভের খবর সংগ্রহের জন্য গ্রেপ্তার হওয়া ১১ জন সাংবাদিককে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে এএফপি-র চিত্রগ্রাহক ইয়াসিন আকগুলও ছিলেন।
এছাড়াও, বিবিসির সাংবাদিক মার্ক লোয়েনকেও তুরস্ক থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার ১৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ‘জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।
তুরস্কের যোগাযোগ দপ্তর জানিয়েছে, লোয়েনকে ‘স্বীকৃতির অভাবের’ কারণে বহিষ্কার করা হয়েছে।
২০২৩ সালে, সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেওয়ার কারণে মেদিনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। ওই মিছিলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের একটি কাটআউটকে ফাসিতে ঝোলানো হয়েছিল।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ১৫ জন সন্দেহভাজনের মধ্যে মেদিনও ছিলেন, যাঁরা এই বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছিলেন, আয়োজন করেছিলেন বা এর প্রচার করেছিলেন।
এই ঘটনার জেরে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ হয় এবং তারা সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।
এই ঘটনার মাধ্যমে তুরস্কে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভিন্নমতের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব আবারও স্পষ্ট হয়েছে।
একইসাথে, তুরস্ক ও সুইডেনের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাও নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান