ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মায়ানমার ও থাইল্যান্ড: মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়েছে, বাড়ছে আশঙ্কা।
প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো মায়ানমার ও থাইল্যান্ড। রিখটার স্কেলে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে। এতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।
ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়াদের উদ্ধারে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে।
ভূমিকম্পের কারণে শুধু মায়ানমার নয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক সহ প্রতিবেশী দেশগুলোতেও বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভূমিকম্পের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের মন্ডলে শহর। এখানে বহু পুরনো মন্দির ও প্রাসাদ রয়েছে, যেগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া, ভূমিকম্পের কারণে ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। এতে বহু মানুষ আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মায়ানমারের সামরিক বাহিনী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। এর পরেই বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল সেখানে পৌঁছাতে শুরু করেছে।
ভূমিকম্পের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ চিত্র এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ ও সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।
মায়ানমারে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং এবং জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এগিয়ে এসেছে।
চীন এরই মধ্যে জরুরি সহায়তা হিসেবে ১৩.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যান্য দেশ ও সংস্থাগুলোও ত্রাণ সামগ্রী ও উদ্ধারকর্মী পাঠাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল অগভীর হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।
এর আগে ১৯১২ সালে মিয়ানমারে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।
ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমারে বিদ্যমান গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গত এলাকায় সাহায্য পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তা ত্রাণ বিতরণে বাধা সৃষ্টি করছে।
তথ্য সূত্র: CNN