গিলগো বিচ সিরিয়াল কিলারের রহস্য: দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর অবশেষে গ্রেপ্তার, তদন্তে পুলিশের গাফিলতি।
যুক্তরাষ্ট্রের লং আইল্যান্ডে, ২০১৬ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সংঘটিত হওয়া একটি চাঞ্চল্যকর সিরিয়াল কিলিংয়ের ঘটনার তদন্ত এখনো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ঘটনাটি ঘটেছিল গিলগো বিচ নামক স্থানে।
এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন নারীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর, পুলিশি তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা এবং ভুক্তভোগীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। অবশেষে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রেক্স হিউয়ারম্যান নামে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই ঘটনার শিকার হওয়া নারীদের বেশিরভাগই ছিলেন যৌনকর্মী। সম্ভবত তাদের পেশাগত পরিচয়ের কারণে, প্রথম দিকে পুলিশের তদন্তে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। মৃত নারীদের মধ্যে ছিলেন মৌরিন ব্রেইনার্ড-বার্নেস, মেগান ওয়াটারম্যান, মেলিসা বার্তেলেমি এবং অ্যাম্বার কস্টেলো।
তাদের ‘গিলগো ফোর’ নামে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও, আরও কয়েকজন নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের হত্যাকাণ্ডের সাথে হিউয়ারম্যানের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, সন্দেহভাজন রেক্স হিউয়ারম্যান একজন স্থপতি ছিলেন এবং তিনি নিউইয়র্ক সিটিতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ঘটনার তদন্তে বিলম্বের পেছনে পুলিশের গাফিলতি ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন পুলিশ প্রধান এবং ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি’র মধ্যে এক ধরণের যোগসাজশ ছিল, যার কারণে তদন্তে সঠিক পথে এগোতে বেশ বেগ পেতে হয়।
ঘটনার শিকার নারীদের পরিবার পরিজনদের অভিযোগ ছিল, ঘটনার শুরুতে পুলিশ তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি। এমনকি ভুক্তভোগীদের সম্পর্কে সমাজের নেতিবাচক ধারণার কারণে, তাদেরMissing ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতেও অনেক সময় লেগেছে।
পরবর্তীতে, এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করা হয় এবং তাদের তৎপরতায় অভিযুক্তকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে একটি তথ্যচিত্র, যার নাম “গন গার্লস: দ্য লং আইল্যান্ড সিরিয়াল কিলার”। নেটফ্লিক্সে প্রচারিত এই তথ্যচিত্রে ভুক্তভোগী নারীদের জীবন এবং তাদের পরিবারের কষ্টগাঁথা তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্যচিত্রে পুলিশের তদন্তে গাফিলতি এবং দুর্নীতির চিত্রও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
এই মামলার তদন্ত এখনো চলছে। রেক্স হিউয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন এবং তাকে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
তবে, এই ঘটনার শিকার হওয়া নারীদের পরিবারগুলো তাদের স্বজন হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার জন্য ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন।
তথ্য সূত্র: The Guardian