ফ্লোরিডার নির্বাচনে রিপাবলিকানদের কপালে চিন্তার ভাঁজ, ট্রাম্পের দল কি চাপে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা: ফ্লোরিডার বিশেষ নির্বাচন নিয়ে রিপাবলিকানদের চিন্তা

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখন চলছে তীব্র উত্তেজনা। ফ্লোরিডায় আসন্ন দুটি বিশেষ নির্বাচন রিপাবলিকানদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিধি পরিষদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এমনিতেই খুব সামান্য, আর এই পরিস্থিতিতে এই নির্বাচনগুলো তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন সদস্যের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া আসনগুলোর জন্যই এই নির্বাচন।

ফ্লোরিডার এই দুটি বিশেষ নির্বাচন (special elections) মূলত দুটি কংগ্রেশনাল জেলার (Congressional districts) জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই জেলাগুলো হলো ৬ষ্ঠ এবং ১ম। ৬ষ্ঠ কংগ্রেশনাল জেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মাইকেল ওয়াল্টজের (Michael Waltz) জায়গায়, যিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল।

অন্যদিকে, ১ম কংগ্রেশনাল জেলার নির্বাচন হচ্ছে ম্যাট গেটজের (Matt Gaetz) স্থলে, যিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই দুটি জেলাতেই ট্রাম্প বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন।

বিশেষ করে ৬ষ্ঠ কংগ্রেশনাল জেলার নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী র‍্যান্ডি ফাইনকে (Randy Fine) নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ডেমোক্রেট প্রার্থী জোশ ওয়েল (Josh Weil) ফিনের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন, যা রিপাবলিকানদের জন্য একটি অশনিসংকেত।

নির্বাচনে অর্থ সংগ্রহের এই বিশাল পার্থক্য অনেক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, ওয়েল প্রায় ৯.৫ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছেন, যেখানে ফাইন মাত্র ১ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছেন।

এমনকি ফিনের প্রচারণার দুর্বলতা নিয়ে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ সরাসরি ফাইনকে তার প্রচারণার কৌশল পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নির্বাচনগুলোর ফলাফল শুধু ফ্লোরিডার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এর প্রভাব পড়তে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনেও।

প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বর্তমানে সামান্য, যেখানে তাদের আসন সংখ্যা ২১৮ এবং ডেমোক্রেটদের ২১৩। এমন পরিস্থিতিতে, ফ্লোরিডার নির্বাচনে পরাজয় রিপাবলিকানদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি রিপাবলিকানরা প্রত্যাশিত ফল নাও করতে পারে, সেক্ষেত্রে এর কারণ হতে পারে ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন কমে যাওয়া।

এমনকি ডেমোক্রেটরাও এই নির্বাচনে ভালো ফল করার সম্ভাবনা দেখছে, যা তাদের জন্য একটি বড় উৎসাহ হতে পারে। ডেমোক্রেট দলের নেতারা মনে করছেন, এই নির্বাচন তাদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করবে, যা আগামী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে সাহায্য করবে।

নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন, এটি স্পষ্ট যে রিপাবলিকান দল এখন বেশ কঠিন সময় পার করছে। তাদের দুর্বল সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং বিভিন্ন বিতর্কের কারণে দলের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

সামনের দিনগুলোতে এই পরিস্থিতি কিভাবে পরিবর্তন হয়, সেদিকেই তাকিয়ে আছে সবাই।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *