ক্ষমতার প্রতিশোধ: ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির চিত্র
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতিশোধের নেশা কিভাবে তার রাজনৈতিক চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে, সেই চিত্র তুলে ধরেছেন সাংবাদিক অ্যালেক্স আইজেনস্টাড তার নতুন বই ‘রিভেঞ্জ’-এ। বইটিতে ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়ণতা এবং ক্ষমতা প্রদর্শনের নানা দিক উন্মোচন করা হয়েছে। সম্প্রতি বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বইটিতে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তিনি তার বিরোধীদের কিভাবে ঘায়েল করতে চেয়েছেন, সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিশেষ করে, ডেমোক্রেট দলের জো বাইডেন, ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস, মিডিয়া টাইকুন রুপার্ট মারডক এবং রিপাবলিকান দলের সদস্য লিজ চেনির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক এবং তাদের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি বইটিতে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বইটিতে বলা হয়েছে, ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। এমনকি, যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদেরও ছাড় দেননি তিনি। যেমন, ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ট্রাম্প তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের দেওয়া ক্ষমাগুলো বাতিল করার চেষ্টা করেন। এছাড়া, লিজ চেনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি তার দলের সদস্যদের চাপ সৃষ্টি করেন।
রন ডিস্যান্টিসের বিষয়ে ট্রাম্পের মনোভাব ছিল বিশেষভাবে আক্রমণাত্মক। বইটিতে ডিস্যান্টিসকে অপমানিত করার জন্য ট্রাম্পের নানা চেষ্টা এবং তার ফল তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি, ট্রাম্প নাকি একবার বলেছিলেন, ডিস্যান্টিস তার কাছে এসে কান্নাকাটি করে তার সমর্থন চেয়েছিলেন।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রুপার্ট মারডকের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কও ছিল সবসময় টানাপোড়েনপূর্ণ। একসময় মারডকের মালিকানাধীন ‘নিউ ইয়র্ক পোস্ট’ ট্রাম্পকে সমর্থন দিলেও, পরে ডিস্যান্টিসকে সমর্থন জানানোয় তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। ট্রাম্প নাকি মারডককে ‘শয়তান’ বলেও অভিহিত করেছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘রিভেঞ্জ’ বইটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক চরিত্র এবং তার ক্ষমতা প্রদর্শনের কৌশল সম্পর্কে নতুন ধারণা দেয়। বইটিতে ট্রাম্পের প্রতিশোধস্পৃহা এবং ক্ষমতা ধরে রাখার মানসিকতাকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান