ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক মামলার রায় ঘোষণার অপেক্ষায় দেশটির প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ মারিন লে পেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের তহবিল তছরুপের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের রায় সোমবার ঘোষণা করা হবে।
এই রায়ের ওপর নির্ভর করছে লে পেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।
মারিন লে পেন ফ্রান্সের একটি পরিচিত মুখ এবং তিনি কট্টর-ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি (National Rally – RN) পার্টির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। অতীতে তিনি একাধিকবার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি এবং তাঁর দলের কয়েকজন সদস্য। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে, লে পেনের কারাদণ্ড হতে পারে, সেই সঙ্গে প্রায় ৩ লক্ষ ইউরো জরিমানা এবং রাজনৈতিক পদ গ্রহণে পাঁচ বছর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞাও আসতে পারে।
এমনটা হলে, ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে যাবে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে মূলত ফ্রান্সে কর্মরত ন্যাশনাল র্যালি পার্টির কর্মীদের বেতন পরিশোধের জন্য। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ধারণা, এই ঘটনায় প্রায় ৭০ লক্ষ ইউরোর মতো অর্থের তছরুপ হয়েছে।
যদিও লে পেন এবং তাঁর দলের অন্য অভিযুক্তরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যদি আদালত লে পেনের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন বড় ধরনের সংকটে পড়বে। রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি আপিল করতে পারেন, সেক্ষেত্রে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আপিলের শুনানির আগে পর্যন্ত তাঁর কারাদণ্ড অথবা জরিমানার সিদ্ধান্ত স্থগিত থাকতে পারে। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের রায় তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে।
ন্যাশনাল র্যালি পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লে পেনের রাজনৈতিক অযোগ্যতা নিয়ে কোনো আলোচনা তারা করতে রাজি নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মারিন লে পেনের বিরুদ্ধে আসা এই রায় শুধু তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং তা ফ্রান্সের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও প্রভাব ফেলবে।
কারণ, এই রায়ের মাধ্যমে দেশটির ডানপন্থী রাজনীতির ভবিষ্যৎও অনেকটা নির্ধারিত হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian