গাজায় বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করতে যেকোনো ধরনের চুক্তিতে আসতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। রবিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
একইসঙ্গে হামাসের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া এবং সামরিক চাপ অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা প্রস্তুত। আলোচনার মাধ্যমে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। হামাস অস্ত্র ত্যাগ করলে তাদের নেতারা নিরাপদে যেতে পারবে এবং গাজা উপত্যকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি আরও জানান, হামাসের সঙ্গে জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতেও ইসরায়েল রাজি আছে।
অন্যদিকে, গাজায় এখনো বন্দী থাকা জিম্মিদের মুক্তি চেয়ে শনিবার তেল আবিবে বিশাল বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহু সরকারের সমালোচনা করে অভিযোগ করেন, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার চেয়ে সরকার সামরিক পদক্ষেপের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকে তাদের স্বজনদের মুক্তির দাবি জানান।
গত বছর হামাসের হামলায় ২৫১ জন ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দী করা হয়। তাঁদের মধ্যে এখনো ৫৪ জন গাজায় বন্দী আছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে ৩৪ জন এরই মধ্যে মারা গেছেন।
এদিকে, হামাস জানিয়েছে, তারা মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় পাওয়া একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাঁচজন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি।
বিনিময়ে তারা ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতি চাইছে। হামাসের একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, তারা এই প্রস্তাবের বিষয়ে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হামাস ঈদুল ফিতরের আগেই জিম্মিদের মুক্তি দিতে চায়। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তারা হামাসের প্রস্তাবটি পেয়েছে এবং এর জবাব দিয়েছে।
তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ঠিক কী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নেতানিয়াহু সরকার ২৪ জন জিম্মির মধ্যে ১০ জনকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে জোর দিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন নেতানিয়াহু। আগামী ২ এপ্রিল তাঁর হাঙ্গেরি যাওয়ার কথা রয়েছে।
যদিও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান