ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া ট্রাম্প! তৃতীয় মেয়াদের ইঙ্গিত!

ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এমন কিছু “পদ্ধতির” কথা উল্লেখ করেছেন যা সংবিধানের সেই বিধিনিষেধকে এড়িয়ে যেতে পারে যেখানে একজন রাষ্ট্রপতিকে সর্বোচ্চ দুইটি মেয়াদ দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হয়।

সাক্ষাৎকারটি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়, যেখানে ট্রাম্পকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছিল যে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করছেন কিনা। জবাবে তিনি সরাসরি কোনো ‘পরিকল্পনা’র কথা উল্লেখ না করে কিছু “পদ্ধতির” কথা বলেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি দুবারের বেশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে পারেন না। এই সীমাবদ্ধতা সংবিধানে ২২তম সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে। তবে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর অনেকে মনে করছেন, তিনি সম্ভবত এমন কোনো কৌশলের কথা ভাবছেন যা এই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে পাশ কাটিয়ে তৃতীয়বার নির্বাচনে দাঁড়াতে সহায়ক হতে পারে।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সম্ভাব্য একটি কৌশলের বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। সেটি হলো, তিনি যদি তার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে থাকা কোনো ব্যক্তির রানিং মেট হন এবং সেই ব্যক্তি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্টকে দ্রুত পদত্যাগ করতে বলতে পারেন। এর ফলে ভাইস প্রেসিডেন্টের স্থলে ট্রাম্প নিজেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারবেন। তবে, এই ধরনের কোনো পদক্ষেপের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী অনুসারে, যিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন, তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেরেক মুলার মনে করেন, ট্রাম্প যদি ২২তম সংশোধনীর কারণে প্রেসিডেন্ট পদে অযোগ্য হন, তাহলে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেও প্রার্থী হতে পারবেন না।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্য তাঁদের ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। ওকলাহোমার রিপাবলিকান সিনেটর মার্কওয়েইন মলিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি সংবিধান পরিবর্তন করে ট্রাম্পকে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দিতে রাজি নন।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে পরিবর্তনের জন্য কংগ্রেসের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন এবং দেশের তিন-চতুর্থাংশ রাজ্যের আইনসভার অনুমোদন প্রয়োজন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের অনুসারীদের পক্ষে এই পরিমাণ সমর্থন আদায় করা সহজ হবে না।

প্রসঙ্গত, ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টানা চারবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যুর পর, ১৯৫১ সালে ২২তম সংশোধনী আনা হয়, যা প্রেসিডেন্টদের মেয়াদ সীমিত করে দেয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *